Monday, 26 December 2016

প্রতীক্ষা

প্রতীক্ষা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

স্বপ্ন সাজায় রাতে তোমার
অঘোর নিদ্রা কালে
বিভোর নেশায় তুমি তখন
কলুষ মায়াজালে
ডাগর ডাগর নয়ন তুলে
দেখবে যখন দিনে
পথ চেয়ে তোমার পানে
গোলাপ তোমার বনে
হারিয়ে গেছি অনেক দূরে
তবুও রেখো মনে
একটুখানি জায়গা রেখো
তোমার মনের কোণে
প্রদীপ হয়ে জ্বলবো রাতে
নীল গগনের গায়ে
চিনে নিও নিজের ভেবে
নয়ন তুলে চেয়ে
ভাবনা অনেক ভিড় করেছে
তোমার ভাবনার মাঝে
তুমিও কবে আসবে ফিরে
সহসা আমার কাছে

Monday, 19 December 2016

শিশিরে ভিজা সকাল

শিশিরে ভিজা সকাল

আব্দুল মান্নান মল্লিক

শ্যাম সকালে শিশির ঝরে,
ফড়িং কাঁদে ঘরে।
ছোট ছোট ঘাসের মাথা,
শিশিরে ঢলে পড়ে।।
পূবের কোণে সূয্যি মামা,
চাইনা নয়ন তুলে।
শিশির মাঝে পথ হারিয়ে
রাস্তা গেছে ভুলে।।
ধোঁয়া ধোঁয়া মাঠের প্রান্তে,
গুটি গুটি পায়ে।
ধানের ডালা কাঁখে লয়ে,
ধান কুড়ানি মেয়ে।।
পুঁঠি মাছের কান্নাকাটি,
জলাভূমির খাদে।
নাম ডাকে তার জলাভূমি,
জল থাকেনা তাতে।।
ঝুপি ঝুপি বক বসে ওই,
জলাভূমির ধারে।
শিশিরে সিক্ত গাত্র পত্রে,
শিশির ঝরে পড়ে।।
প্রজাপতির রঙ ধুয়ে যায়,
শিশির ভিজা গায়ে।
সর্ষে ক্ষেতের হলুদ ফুলে,
শিশির গেছে ছেয়ে।।

Thursday, 8 December 2016

রবির ভুবনে

রবির ভুবনে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

শীত ভেঙেছে ঘর্ম ঝরেছে,
তোমার আলিঙ্গনে।
তুমি বিনা অন্ধ সবাই,
জাগ্রত ও স্বপনে।
তোমার ছোঁয়ায় ওই যে হাসে,
রাত আকাশের তারা।
চাঁদের আলোয় তাইতো শোভন,
আকাশ হতে ধরা।
দিনের বেলায় খেলছ অনেক,
শত রঙের খেলা।
কখনো রূপসী কখনো তেজস্বী,
মলিন সাঁঝের বেলা।
লালন পালন শোভন দিলে,
সবই তোমার দান।
আকাশ বাতাস ভুবন তোমার,
খবরদারি অণিয়ান।
রাহু সেও হার মেনে যায়,
তোমারে ভক্ষণ করে।
বৃথাই প্রয়াস উগরিয়ে হায়,
ব্যর্থ ধরিতে জঠরে।
কোথায় তোমার জনম কথা,
কে দিয়েছে গঠন।
কেউ কি জানে কবে তোমার,
কিসে হবে মরণ?


Friday, 2 December 2016

ভোরের শিশিরে

ভোরের শিশিরে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ঘাসের মাথায় শিশির ঝলক,
চনমন ভোর হাসিতে।
সিঁদুর থালায় পূব আকাশে,
ইচ্ছে করে ভাসিতে।
ভ্রমর মাতাল বাতাস মাতাল,
ধনে ক্ষেতের গন্ধে।
শিশির ধোঁয়ায় পথ হারিয়ে,
চাতক উড়ে ধন্দে।
শাপলা ফোটা ডোবার ধারে,
ফড়িং ধরে বেঙে।
মাথার উপর বক উড়ে যায়,
উজান শিশির ভেঙে।
নাগ নাগিনী জড়িয়ে লতায়,
প্রেমের নয়ন মেলে।
প্রজাপতি ডানা মেলে ওই,
শালুক রঙিন ফুলে।
শিশির সিক্ত পাতাই পাতাই,
ছোট্ট পাখির চাঁন।
শাখায় শাখায় দোয়েল পাখি,
ধরেছে মধুর গান।
ভোরের পাখি কিচিরমিচির,
শিউলি শাখে বসে।
হারিয়ে উদাস মন হল আজ,
শিশির স্রোতে ভেসে।

Sunday, 27 November 2016

√ বলিদান

বলিদান

আব্দুল মান্নান মল্লিক

দৃষ্টি দাও দেখিবারে শক্তি দাও ধৈর্যের,
ভালোবাসার মন দাও পথ দেখাও সত্যের।
ধুয়ে দাও কালিমা মনের দূর কর অন্ধকার,
নিদ্রিত অক্ষি যেই খুলে দাও দ্বার তার।
কষ্ট দাও খুশি তব তবু তোমার অনুগামী,
বিগতকে ভুলিয়ে ভাবতে দাও আগামী।
করব না আর খুনোখুনি তবেই মানব ধন্য,
আদি কথা থাকনা পড়ে আর হবনা বন্য।
চিত্ত মাঝে বাঁসা বেঁধে বসত করে শয়তান,
শক্তি দাও করতে পারি তাদের আজ বলিদান।
চক্ষু দিয়ে আঁধার দেখাও একি তোমার ছলনা,
দিকভ্রান্ত পথিক আমি তোমার হাতের খেলনা।

Tuesday, 15 November 2016

কাছের বন্ধু

কাছের বন্ধু

আব্দুল মান্নান মল্লিক

যেথায় জলে নদীর বাঁকে,
নৌকার পাল তুলে।
মাঝির গানে নৌকা ছুটে,
হাওয়ায় দুলে দুলে।।
ধেনু চরে মাঠের মাঝে,
রাখাল গাছের তলে।
মেঠো সুরে বাঁশের বাঁশি,
গাঁয়ের কথা বলে।।
খাটুনি খেটে দিন বয়ে যায়,
ফিরে সন্ধাকালে।
তবুও মনে খুশি তাদের,
বসত খড়ের চালে।।
কখনো পুড়ে রোদ্র তাপে,
কখনো ভিজে জলে।
কখনো চাষি তামাক টানে,
বসে জমির আলে।।
দেশের মেথর মুচি ডোম,
কামার ছুতোর জেলে।
সবাই মোদের কাছের বন্ধু,
থাকি সবে মিলে।।
সবুজ বাঙলার অবুঝ মন,
সত্য পথে চলে।
মিথ্যা কথা বলেনা কেউ,
সত্য কথা বলে।।


Monday, 14 November 2016

পথের শেষে

পথের শেষে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ক্লান্ত তবু পথ হেটে যাই,
পিছন ফিরে চেয়ে দেখি।
পড়ে আছি ছিলাম যেথায়,
সম্মুখের পথ অল্প বাকি।।
লাল সবুজের রঙ বিনিময়,
অদূরে ওড়ে সবুজ নিশান।
বন্ধ দুয়ার খুলেছে ওই,
সমাদরে আজ করে আহ্বান।।
কোথায় খেলার সঙ্গী সাথি,
ফেলে আসা খেলার মাঠ।
জীবন সাঁঝের পথের পাতি,
ওই দেখা যায় খোলা কপাট।।
অসাড় চিত্তে ভাবছি বসে,
সব ছিল আজ খালি হাতে।
আলো মিলায় পূব আকাশে,
গোধূলি বেলার অশ্রুপাতে।।

আমাদের বঙ্গভূমি

আমাদের বঙ্গভূমি

আব্দুল মান্নান মল্লিক

আমাদের এই বঙ্গভূমি,
শূন্য আকাশ তলে।
যেদিকে চায় হরিত রঙে,
পদ্ম ফুটে জলে।।
রঙ বেরঙের পশুপাখি,
হরেক রঙের ফুলে।
এত পখির মাঝে কেউ,
বউ কথা কও বলে।।
ফটিকজল ডাকছে পাখি,
কামিনী গাছের ডালে।
ভ্রমর উড়ে গুনগুনিয়ে,
কখনো বসে ফুলে।।
গাছে গাছে জোনাকি বাতি,
নিভে আবার জ্বলে।
রাতের তারার মুচকি হাসি,
দূর আকাশের কোলে।।
কাক শালিকের ঝগড়াঝাঁটি,
ময়না কথা বলে।
বদের আঁঠি কাঠবিড়ালি,
সজনে গাছের ফুলে।।

Thursday, 10 November 2016

অপূর্ণ স্বপ্ন

অপূর্ণ স্বপ্ন

আব্দুল মান্নান মল্লিক

পালক মেলেছে স্বপ্ন আমার
দূর দিগন্ত পারে।
হারিয়ে গেছে রূপক ভাবনা
রাত ফুরানো ভোরে।।
স্বপ্নঝড়ে মন ভেঙে যায়
পৃথিবী গেছে সরে।
কল্প কথার গল্প ছিল
আবছা ঘুমের ঘোরে।।
ঝুমুরঝুমুর নূপুর বাজে
কে যেন আসে ওই।
কাকজোত্স্না স্বপ্ন রাতে
কম্পন দিয়ে হৃদয়।।
তরুণী উর্বশী ওই যে আসে
বলবে কথা কানে কানে।
মধুর স্বপ্ন হারিয়ে কোথায়
ভোরের পাখির গানে।।

Thursday, 20 October 2016

অভিমানী

অভিমানী

আব্দুল মান্নান মল্লিক

খেলার শেষে সন্ধ্যাকালে,
বই ছেড়ে আজ মাধবীতলে।
দিন যায় তোর ঘুমিয়ে পাতায়।
লজ্জা ভারি ঘোমটা মাথায়,
আঁখি খোলো মাধবী কলি,
ঐ যে মিলাই সন্ধ্যা গোধূলি।
লুকাসনা আর পত্রতলে,
তোর আশাতে সন্ধ্যাকালে।
ভ্রমর সবে নিরাশ হয়ে,
ঐ যে ফিরে আপন কুলায়ে।
থাকিস কেন অন্ধ হয়ে,
ভান করিসনা একগুঁয়ে।
তুই যে বড় অহংকারী,
কি প্রয়োজন করব আড়ি।
সবুরে কথায় মেওয়া ফলে,
তোর সাথে মোর তেলেজলে।


Wednesday, 19 October 2016

জীবন মরণ

জীবন মরণ

আব্দুল মান্নান মল্লিক

স্বপ্ন নাকি বাস্তব জীবন
বলতে পারে কেউ।
অবনত আর উন্নত যেমন
তিন সগরের ঢেউ।।
শৈশব যৌবন বার্ধক্য আসে
শুনেনা কারো মানা।
কে কত আর হিসাব রাখে
বাতাসে মেলে ডানা।।
তত্ত্বজ্ঞানী জ্ঞানের ভাণ্ডারী
করে গেছে নিরীক্ষণ।
অধুনা কালে জ্ঞানবিজ্ঞানী
তাদের করে অনুসরণ।।
কেউবা ভাবে ইচ্ছাতে সব
কেউবা খুজে কারণ।
এই কথাটির আসল প্রমাণ
জীবন পেলেই মরণ।।

Tuesday, 18 October 2016

কাঁটা বিঁধা পা

কাঁটা বিঁধা পা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

দুষ্টুমি আর মিষ্টি কথায়
দুষ্টুমি আর করিসনা।
যতোই করিস ছলচাতুরী
মিথ্যা কথায় ভুলছিনা।।
তোর প্রেমে পাগল হয়ে
শুধুই পেলাম যন্ত্রণা।
ভালোবেসে কাছে যেতে
পেলাম শুধুই কুমন্ত্রণা।।
ঘুরিস না আর দিবস রাতি
লাল গোলাপটি হাতে।
হাতের ফুল শুকিয়ে যাবে
বৃথাই স্বপন রাতে।।
জগতটারে দেখলাম কত
রকম রকম রঙ।
ভালোবাসার আসন পেতে
নানান সাজের ঢঙ।।
জগতটারে ভাবিসনা আর
মেয়ে খেলার বাজার।
তুই যে পাড়ার ধনীর দুলাল
কিবা আছে আর?
রঙ মেখে রঙ কেউবা ঢাকে
ভেলকি খেলার সাজে।
আসল নকল যায়না চেনা
এই জগতের মাঝে।।


Tuesday, 4 October 2016

কাঁচা মাটির মা

কাঁচা মাটির মা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

মায়ের বুকে আঁচড় টেনে
করছে চাষি চাষ।
কেউবা মাকে দাহ করে
অট্টালিকায় বাস।।
যে মাটিতে মায়ের সাদৃশ্য
বাঁচাই সবার প্রাণ।
সেই মাটিকে পুড়িয়ে গড়ো
বড়বড় দালান।।
মিছামিছি ডাকিস না আর
পুড়া মাটির ঘরে।
মা যে মোদের কাঁচা মাটির
আছে হৃদয় জুড়ে।।
যেথায় আছে গরীব দুখী
কাঁচা মাটির ঘর।
মা যে সেথা তাদের সাথে
তোদের করে পর।।
কেউ গড়েছে মূর্তি মায়ের
স্বর্ণমন্দির ঘরে।
মা আসছে মাটির ঘরে
একটি বছর পরে।।
সাদা শাড়ি লাল পেড়েতে
মা যে ছিল খুশি।
অধুনা সাজে হারিয়ে যায়
মায়ের মুখে হাসি।।

Saturday, 24 September 2016

চেনা অচেনা

চেনা অচেনা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

গগন তলের পাখি হবো?
জলের মাঝে মৎস্য?
না হয় বনের বাঘ ভালুক,
আগুনে ধোঁয়া ভস্ম!
ইচ্ছা করে বাঁচতে আমার,
মানুষ হয়ে থাকি।
বাঘ ভালুক হবো না আর,
চাইনা হতে পাখি।
দিনে রাতে রঙ বদলায়,
স্বপ্ন অনেক আঁকি।
ঘরের মানুষ পর হয়ে যায়,
নিজেই পড়ি ফাঁকি।
সফল জনম তবেই ধন্য,
নাহয় রঙের বদল।
মানুষ নামের মানুষ গন্য,
একটি রঙের আদল।
বাঘের অধিক ভয়ে মরি,
ছাগলে খেলে মানুষ।
কেমন করে বিশ্বাস করি,
মানুষ হলে বেহুশ?

Tuesday, 6 September 2016

সাথীহারা

সাথীহারা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

কান্না ছিল বাদল দিনের,
সুর হারানো গান।
নিভৃতে সেই মেঘের বিলাপ,
অশ্রুতে করেছিলে স্নান।
আকাশ ঝরা কান্না ছিল,
ব্যথা লুকানো হাসি।
কথা ছিল আসবে ফিরে,
মেঘের সাথে ভাসি।
একা একা আকাশ চেয়ে,
বাদল দিনের বেলায়।
ফিরে আসে দিনটি আবার,
তোমার দেখা নাই।
বিষণ্ণতায় আকাশ ছেয়ে,
নীরদ কান্নার জলে।
বাদল দিনে তোমার কথা,
কেউ যায়নি ভুলে।
চারিপাশটা শূন্য আঁধার,
বিজনে আমি একা।
তুমি হীনা বৃথায় জীবন,
কষ্টে বেঁচে থাকা।


Friday, 19 August 2016

এপার ওপার

এপার ওপার

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ভালবাসার কাছে কাছে ছিলে হৃদয় জুড়ে,
তুমি কোথায় আমি কোথায় আজ কতদূরে।
মনে পড়ে ভিজেছিলাম এমনি একটা দিনে,
শিউলি গাছের শাখা ধরে চোখাচোখি দুজনে।
বলেছিলে বাঁধবো বাসা সুখ সাগরের তীরে,
দুজনাতে রব সেথা ভাগ্যকে আঁকড়ে ধরে।
এঁকেছিলাম হৃদয় দ্বারে কল্পনার আলপনা,
অহিঘাতে পরিসমাপ্তি সুখ সীমানার ভাবনা ।
নিয়তির নিষ্ঠুরতা এক সাগরের দুটি ধারা,
ওপারে রয়েছ তুমি এপারে আমি সর্বহারা।



Sunday, 14 August 2016

শহীদ স্মরণে

শহীদ স্মরণে 

আব্দুল মান্নান মল্লিক

রক্ত দাও রক্ত দাও ফিরিয়ে দাও সেই দিন,
সুদ আসলে মিটিয়ে দাও মহান শহীদের ঋণ।
মায়ের বক্ষে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে ওই,
উঠবে জেগে বক্ষ ছেড়ে হবেই মোদের জয়।
কতশত ঘুমিয়ে আত্মা ধুলিতে আছে মিশে,
জয় সংগীত গাইছে তারা প্রছন্নে চারপাশে ।
ভয় নাই ওরে ভয় নাই আছি তোদের সাথে,
বজ্রমুঠে ধরিস এবার শানিত তরবার হাতে।
করব শপথ গড়ব আবার মহান ভারত দেশ,
বিরোধের আজ হোক অবসান নব উন্মেষ।
আগামী দিনে গাইবে সবে স্বাধীনতার গান
মাতৃভূমির যোগ্য সন্তান শহীদ মায়ের প্রাণ।
রক্ত মেখে দেশ গড়তে সহে গেছে অপমান,
জয়ের গান গাইব মোরা শহীদদের অবদান।
হতভম্বে দেখবে জগৎ দূরের আকাশ পানে,
জয়ের নিশান উড়বে দেশে স্বাধীনতার দিনে।



Wednesday, 27 July 2016

শাস্ত্রের দোহাই

শাস্ত্রের দোহাই 

আব্দুল মান্নান মল্লিক

অগণিত সৃষ্টির স্রেষ্ঠ মানব জনম,
তবু কর্মে মানুষ কেউ পশুর অধম।
জাতি বিদ্বেষ কেন তবে মানুষে মানুষে,
হিংসার বশে মানুষ এ উহারে দুষে
কামিনী কেতকী গোলাপ চামেলি বেলি,
বাতাসে নেচে নেচে করে কোলাকুলি।
ফুলে ফুলে মাখা-মাখি একটি বাগে,
কুলনাশ হয় কখনো মিশিয়া পরাগে?
ফুলে ফুলে প্রজাপতি বাগান চত্বরে ,
জাত বিচার নাই তার মধুপান করে।
সকল জীবের শীর্ষে মানুষই আশ্বাস,
তবু কেন ঈর্ষা বসে হয় প্রাণনাশ?
ঘাঁটা-ঘাঁটি দিবা-রাত্রি শাস্ত্রের বচন, 
স্বার্থ ছাড়া শাস্ত্র-কথা বুঝে কয়জন? 
শাস্ত্রের দোহাই আর অদৃষ্টের লিখন,
অপব্যাখ্যায় করে মানুষ পশুরে নিধন।
নিজ শাস্ত্র শিকার পরে করে গুণগান,
অপর শাস্ত্রে মাথা ব্যথা করতে অপমান। 
হিন্দু বল মুসলিম বল জৈন খ্রিস্টান?
স্রষ্টার চোখেতে সবাই সমান সমান।

Sunday, 24 July 2016

বিলাপ

বিলাপ

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ফুলদানি দেখি যদি হাতে কারো,
ভয় পেয়ে প্রাণ হয় জড়োসড়ো।
ছিন্ন করনা বৃন্ত নিষ্ঠুর নির্মমতায়,
নীরবে সহে জ্বালা আমি যে অসহায়।
ছুঁয়োনা গো ছুঁয়োনা মোরে অঙ্গুলি উষ্ণতায়,
কোমল হৃদয় আমার পুড়ে হবে ছাই।
খুশি করতে চাই তাই আসি বারবার,
সুবাস ছড়িয়ে খুশি হৃদয় আমার।
তোমাদের স্বার্থে বিলাই জীবন শোভন,
ভিন্ন করনা বৃন্ত করনা উৎপীড়ন।
বিলিয়ে দিয়েছি সব যতকিছু মোর,
হয়োনা গো হয়োনা আর নির্দয় কঠোর।
ফুল হাতে দেখে পাষাণ তোমার নিষ্ঠুরতায়,
নতজানু হয়ে রয় ভীষণ বিষণ্ণতায়।
ভেবে যদি থাকো ভুল সাধন সফল,
নেত্রজলে ভাসে সেও হৃদয়ে অনল।
বাঁচিবারে অধিকার সবার সমান,
দুর্বলেরে কর সেবা দাও সম্মান।


Friday, 22 July 2016

জীবন আমার স্বপ্ন

জীবন আমার স্বপ্ন

আব্দুল মান্নান মল্লিক

হয়তোবা ধরণীতে আমি আছি মরে,
ফিরে পাবো জীবন বুঝি মরণের পরে।
পাখিদের গানের সাথে ফুলের গন্ধে, 
ভালবেসে আছি তাই জীবণের ছন্দে।
রঙবেরঙে ঘেরা জগৎ পুষ্প-শোভন, 
দিনের আলোই আশয় করেছে হরণ।
কতশত তারা ফুটে রাতের বেলায়,
ধরণীটা জ্বলে ওঠে  চন্দ্র-জোছনায়। 
চারিপাশ চেয়ে দেখি ইন্দ্রজালে ঘেরা,
জগতের মায়াবেড়ে পড়ে গেছি ধরা।
ছোট্ট পাখির ছটফটানি ছোট্ট এক ঘরে,
দমে-দমে ধরে রাখি ঘোর অন্ধকারে।
ভুলবশে ধরে আছি আঁকড়ে যাদের,
প্রিয়জন দূরে সরে ছিল যারা কাছের।
প্রিয়জন আসে কাছে যতক্ষণ সে আছে,
ইন্দ্রজালে পড়ে দেখি জগৎটাই মিছে।

Tuesday, 19 July 2016

বর্ষণে বেহাল

বর্ষণে বেহাল

আব্দুল মান্নান মল্লিক

বন্দি ঘরে কেউ বারান্দায়,
কেউবা কদম গাছের তলে।
কেউবা পথে ছাতি মাথায়,
কেউবা ভিজে বৃষ্টির জলে।
গগন শূন্যে চাতক ভিজে,
বিহগ-বিহগী গাছের ডালে।
শিয়াল ভিজে মাঠের মাঝে,
দাদুর দাদুরি পাটের আলে।
বৃষ্টি ভিজা বাদলা পোকা,
ডানা পেয়ে গহ্বর ছাড়া।
জলে ভাসে থোকা থোকা,
আশ্রয়হীনা উই পিঁপড়া।
পাড়ার ছেলে বৃষ্টির জলে,
কলার মোচা ভাসিয়ে দিয়ে।
ছলাৎছলাৎ নৌকা চলে,
কলাপাতার পাল উড়িয়ে।
খড়ের চাল চুইয়ে চুইয়ে,
পথের পরে গড়িয়ে পড়ে।
থৈ-থৈ, থৈ জল ঘুলিয়ে,
হাঁসেরা সব খেলা করে।



Monday, 18 July 2016

ঠাকুর দাদার ঘোড়া

ঠাকুর দাদার ঘোড়া

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ঠাকুর দাদার খোঁড়া ঘোড়া,
ডান চোখেতে কানা।
ডাইনে চাইতে বাঁয়ে মোড়ে
শুনেনা কথার মানা।।
তিন পায়েতে নাচের হাঁটন
ধিনতাধিন ধিনতাধিন।
এক ক্রোশ পথ হাটতে সময়
লাগে সাড়ে তিনদিন।।
হাতের লাগাম টানতে থাকি
বসে ঘোড়ার পিঠে।
লাট সাহেবের জামাই যেন
তিন পায়েতে হাঁটে।।
কি জানি কি রোগ ধরেছে
ঠাণ্ডা সর্দি জ্বরে।
দিনে দিনে তিনদিন বাদে
ঘোড়া গেল মরে।।
গাঁয়ের লোকের নানান কথা
বলছে আরও সবে।
ঠাকুর দাদার শোক ধরেছে
হয়তো এমন হবে।।
বাড়ির লোকে ভাবছে বসে
কারণ খুজে সবাই।
ডাক্তার বাবু এসে বলেন
শিঙ ছিলনা তাই।।

Saturday, 16 July 2016

কবিগুরুর স্মরণে

কবিগুরুর স্মরণে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

আজকে বুঝি খুজে পাবো,
আঁধার পথের আলো।
তোমার মাঝে হারিয়ে যাবো,
ঘুচিয়ে আঁধার কালো।
এসেছি আজ মঞ্চে তোমার,
আমরা অতি নগণ্য।
প্রস্তর মাঝে দেখি যতবার,
নিজেকে ভাবি ধন্য।
তুমি মোদের শিরায় শিরায়,
গদ্য প্রবন্ধে ছন্দে।
কবিগুরু আমাদের সহায়,
থেকো গো সানন্দে।
নয়ন তুলে চেয়ে একবার
দেখো মোদের পানে।
ভরিয়ে দিবো মঞ্চ এবার
তোমার কবিতা গানে।
প্রস্তর হয়ে থেকো না কবি,
খোলো অক্ষি এবারে।
ভরিয়ে দিলাম পুষ্প-সুরভি,
তোমার মঞ্চ দরবারে।

Thursday, 14 July 2016

√ বলবে কাকে মা

বলবে কাকে মা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

বলবো কি আর কালো কোকিল তোকে,
লজ্জা নাই তোর আলতা দুটি চোখে।
সব পাখিরা বাসা বুনে তুই যে ফাঁকা ডালে,
বছরে তুই আসিস একবার সুখ বসন্তকালে।
নাইরে তোর জাত বংশ নাইরে নিজের গাঁ,
বৃথাই গেল জীবনটা তোর বৃক্ষশাখায় একা।
মাতৃভক্তি স্নেহমমতা জানিস কি আর তুই,
মধুর কন্ঠে গান গেয়ে তুই মন ভরালি শুধুই।
পরের বাসায় অণ্ড দিয়ে তাইরে নারে না,
বলতো শুনি নিজের বাচ্চা বলবে কাকে মা।
অলসতায় কাটাস জীবন সুখের আশা করে,
বৃক্ষশাখে জীবন গেল ঠাই নাই তোর ঘরে।

বোকা কাক

বোকা কাক
আব্দুল মান্নান মল্লিক
শীর্ষ শাখায় পেচক পেচকী,
বলছে কথা চুপিচুপি।
পেচকী বলে দেখনা মজা,
সর্ষের ভিতর ভুতের রাজা।
পেচক বলে এই পেচকি,
দেখছি দিনের স্বপ্ন নাকি?
পেচকী বলে তাইতো দেখি,
বেঁচে আছি না মরে গেছি?
নিচের ডালে ওই যে দেখি,
কালোয় কালোয় বন্ধু নকি?
কাকের বাসায় কোকিল ছানা,
চুপ, চুপ, চুপ! বলতে মানা!
শুনে যদি একটি কথা,
কাকের হবে মাথা ব্যথা।
পান্তাভাতে মাখবো ঘি,
লোকের কথায় দরকার কি?

Friday, 8 July 2016

চলো যায় মেঘে ভেসে

চলো যায় মেঘে ভেসে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

রঙধনুর ওই সিঁড়ি বেয়ে
যাবো মেঘের দেশে।
নভোচারী তুই আর আমি
মেঘের ভেলায় ভেসে।
বৃষ্টি ভিজে খেলবো দুজন
মেঘের সাথে উড়ে।
বাহু মালায় গাঁথবো তোরে
ঘুরবো আকাশ জুড়ে।
মেঘের ভিতর হারিয়ে যাবো
দেখবে নাতো কেউ।
সাঁতার দিয়ে তুলবো দুজন
মেঘের জলে ঢেউ।
মেঘ-শিখরে ঘর বানিয়ে
করবো দুজন বাস।
তুই আর আমি দেখবো শুধু
বৃষ্টি ভিজা আকাশ।
মেঘের উপর ভাসবো যখন
যেতে আসতে পথে।
হয়তো হবে দেখা কখন
মেঘ কন্যার সাথে।

Wednesday, 6 July 2016

আসবে কি ফিরে আবার

আসবে কি ফিরে আবার

আব্দুল মান্নান মল্লিক

বল ওগো বল শুধু একবার,
আবার কি আসবে ফিরে
আমার দুয়ারে।
হৃদাঙ্গনে দিয়েছিলাম ঠাঁই যারে,
পরমাত্মীয়ের সমাদরে।
দিনের আলোয় অনাহারে।।
চেয়ে দেখ ওই গগন পশ্চিমায়,
বিদায়ের কালে চন্দ্রে মিলায়।
কারো হাসিতে , কারো কান্নায়।।
বল ওগো বল শুধু একবার,
আসবে কি ফিরে জীবনে আবার।
নিষ্ফল কান্নায় করবোনা চিৎকার,
ওই যে ছুঁয়ে যায় আমার দুয়ার।।
জীবনের সময় অজান্তে যায় সরে,
আবার আসবে ফিরে এমনি করে।
কেউবা থাকবে সেদিন কেউ যাবে মরে।।
বল ওগো বল শুধু একবার,
পাবো কি দেখা জীবনে আবার।।

Tuesday, 28 June 2016

ঘুমিয়ে আছে মা

ঘুমিয়ে আছে মা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

নিশানা ওই রাঙা মাটির ভিতরে,
মা কি আজও ঘুমিয়ে চিরতরে?
এই বুঝি ডাকবে এবার আয় সোনামণি,
দুহাত বাড়িয়ে নিবে বুকের মাঝে টানি।
ঘুমায়োনা মাগো তুমি ঘুমায়োনা আর!
কতদিন পাইনি মাগো আদর তোমার।
ঘুমায়োনা মাগো আর দেখো ফিরে এসে,
নতুন মা এসে আজ তোমার জায়গায় বসে।
স্বপ্ন দেখে কাঁদি যখন তোমাকে মনে পড়ে!
নতুন মা মারে আর বলে মারবো আছড়ে।
বাবা হয়তো জেগে বলবে ওরে সোনামণি,
নতুন মায়ের কথা শুনে দেয় ধমকানি।
বুকে মরে কান্না মাগো ডুকরে চিত্ত ভিতর,
নতুন মায়ের কথায় বাবা আমার আজ পর!
নতুন মা বলে আমার জ্বলে যায় পিত্ত,
তোমার কথা শুনলে পরে উত্তপ্ত উন্মত্ত।
কোথায় মাগো দুধুবাটি কে খাওয়াবে দুধু,
ঘুম আসেনা রাতে আমার তোমার ভাবনা শুধু।


Monday, 27 June 2016

√ নিশুতি গাঙের মাঝি

নিশুতি গাঙের মাঝি

আব্দুল মান্নান মল্লিক

অথৈ গাঙের মাঝি আমি গাঙে ভাসায় নৌকা,
ছুটে চলে নৌকা আমার উজান ভাটায় বাইয়া।
ঢেউয়ের দোলে নৌকা দোলে বৈঠা হাতে একা,
ভাটিয়ালি গান গেয়ে যায় ভাটায় ভাসে নৌকা।
গাঙই আমার জীবন সাথি গাঙের জলে ভাসি,
দিন গড়ে যায় রাতের মাঝে তারার মুচকি হাসি।
ওই যে উঠে আবার ডুবে চন্দ্রসূর্য নদীর বাঁকে,
কুলুকুলু ঢেউ বলে যায় গান শুনাচ্ছ কাকে?
দিবারাত্রির মুখোমুখি লাঠির মাথায় নম্পবাতি,
সাঁঝের বেলায় জ্বালিয়ে রাখি জ্বলে সারারাতি।
নির্জন রাত অন্ধকারে ভয় শিহরণ কুলুধ্বনি,
রাত জাগরণে বসে নৌকায় একলা জাল বুনি।
মরাখেকো কুকুর শিয়াল ঘোরাঘুরি রাত্রিকালে,
হয়তো বুঝি ছিঁড়ে খাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে জলে।
রাত-বিরেতে নদীর বাঁকে ভাঙে যখন পাড়,
ডুবু-ডুবু নৌকা আমার হাত-পা হয় অসাড়।
কাশবনে ঐ ঢালুপাড়ে নির্জন এই আঁধার রাতে,
বিড়াল নাকি কাঁদছে শিশু ভাটিয়ালির সাথে।
গা ছমছম! ভয় শিহরণ! বজ্রে হৃদয় বাঁধি,
নদীজলে শব ভেসে যায় ক্ষণিক পথের সাথি।
গাঙে ভাসি বারোটা মাস ভগবানের আশীর্বাদ, 
সংসার বাঁচাতে ব্যস্ত জীবন পাইনি সংসার স্বাদ

Thursday, 23 June 2016

আকাশের কান্না

আকাশের কান্না (b.k প্রকাশিত)

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ও আকাশ তোমার কান্নায় এত জল,
প্লাবিত পথঘাট সিক্ত করেছ ভূ-তল।
ফুরিয়ে যায় অশ্রুজল কাঁদবে কত আর,
পারিনা দিতে তোমার অশ্রুজলে সাঁতার।
ক্লান্তির প্রশ্বাস ধোঁয়া যায় উড়ে উড়ে,
মেঘেদের ঘোরাফেরা আকাশ চত্বরে।
ঝরে পড়ে ফুলদল ভেসে যায় জলে,
অশ্রুজল ফুরাবে নাকি এই বর্ষাকালে।
ঘুটর ঘুটরী ঝিমরে রান্না ঘরের চালে,
ফুলকুঁড়ি ঝুলে পড়ে কান্নার জলে।
সাজানো বাধবী লতা পড়েছে হেলিয়া,
মুর্ছা যায় টবের ফুল ফুটন্ত ডালিয়া।
স্তব্ধ কন্ঠসঙ্গীত মলীনে বৃক্ষ শাখায়,
তোমার কান্নায় বসে পাখিরা অসহায়।
ঠাঁই বসে থাকি আমি যেন এক প্রহরী
বারান্দায় টিনের চাল বাজে যেন ঠুংরি।
বন্ধ কর কান্না এবার বলছি বারবার,
দিবারাত্রি অশ্রুজল সহিব কত আর।
আকাশের রং হারায় ধরণী আঁধার,
কান্নার জল তোমার কত আছে আর।
কত প্রাণী নিরানন্দ তোমার কান্নায়,
গুচ্ছে পুত্তিকা জলে ভাসে অসহায়।

√ হয় কে উন্মাদ

হয় কে উন্মাদ

আব্দুল মান্নান মল্লিক

আমি নাকি উন্মাদ বলে সর্বজন,
বহুরূপী ধারণে কেউ হয় গুণীজন।
সুখের আসন গড়ি সুখী মত্ততায়,
রঙবেরঙের পরিধানে দেখি নগ্নতায়।
আতশকাচ খুলে দেখি সরিয়ে যবনিকা,
দৃশ্যমান বহিরাবরণ হৃৎ অশ্লীল আবর্জনা।
ধুলোবালি মলিয়ে গড়ায় রাস্তায় যখন,
শুধাওনি কুশল মোর কোনো একজন।
পথ কুড়ে তুলেছিনু তেলেভাজা হাতে,
কুকুরেরা কাড়ি নিল শিয়ালদহে ফুটপাতে।
চোখে দেখে যায় সবে উন্মাদ আমি,
জনবহুল ভীড়ে শুধু দেখে অন্তর্যামী।
শান্তির ঠাঁই শুধু উন্মাদনা জীবন,
হারিয়েছ সম্পদ গর্বে সততার মূলধন।
ক্লান্তির অবকাশে ঠাহরি দাঁড়িয়ে,
হরষিত হর্ষধ্বনি বাজে চতুর্দিকে।
আঙুল তোলে মোর পানে করে পরিহাস,
ধ্বনিত বাজে কর্ণে হাসির উল্লাস।
ওদের হাসিতে হাসে মোর অন্তর,
চেপে রাখি হাসি তবু বুকের ভিতর।
তবু সাধ জাগে মন থাকিতে উন্মাদ,
পাইবে কি খুজে মোর জীবনের অনুবাদ?
ওদের সাথে মোর এইতো তফাৎ,
বলিতে পারে ওরা, হয় কে উন্মাদ?


Monday, 20 June 2016

মেঘ কন্যা

মেঘ কন্যা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

কোথায় আছে মেঘকন্যা
কোথায় তার দেশ।
কেমন করে বৃষ্টি ঝরায়
উড়িয়ে কালো কেশ।।
ওই যে আসে মেঘ কন্যা
বর্ষা আষাঢ় মাসে।
পুষ্পকলি যায় যে ভিজে
পাপড়ি পড়ে খসে।।
প্রজাপতির রঙ ধুয়ে যায়
তারই নয়নজলে।
ভরিয়ে দিলে সবুজ গাছে
রঙিন সাদা ফুলে।।
মাধবীলতা যায় যে ঝুলে
বৃষ্টি ঝরা ভারে।
মেঘ কন্যা লুকিয়ে আছে
মেঘের আড়ে আড়ে।।
খসে যাওয়া গুল পাপড়ি
যায় যে জলে ভেসে।
পদ্ম ফোটা দিঘীর জলে
পদ্ম কুসুম হাসে।।

Sunday, 19 June 2016

আমি একা নাকি?

আমি একা নাকি?

আব্দুল মান্নান মল্লিক

নাইবা সাথে থাকলে তুমি
এই নিশুতি রাতে।
জানালা পারে সুবাসে ঐ
হাসনাহেনা সাথে।।
রাত জাগরণে চন্দ্র তারা
বৃক্ষাগ্রে জোনাকি।
জাগে ঐ পেঁচক পেঁচকি
আমি একা নাকি?
মৌগন্ধে বাতাস মাতাল
ফুলের সুবাসে।
ভোরের পাখি গান গানে
বসবে কাছে এসে।।
জমিয়ে রাখা মনের কথা
কব রাতের সাথে।
তোমার কথা ভুলে যাবো
এই নিশুতি রাতে।।
চন্দ্রালোকে রাতের সোহাগ
পাখির গান শুনে।
ভুলে যাবো তখন তোমায়
পড়বেনা আর মনে।।

Thursday, 16 June 2016

ফিরে আসা দিনটি

ফিরে আসা দিনটি

আব্দুল মান্নান মল্লিক

আলোছায়ার হাসিকান্না
বাদল দিনের বেলা।
ফিরে পেলাম দিনটি তবু
তুমি তো এলেনা।।
জীবন নদীর তীরে একা
হয়তো পাবো দেখা।
সকাল দুপুর বিকেল গেল
সিধা সাঁঝের বেলা।
আছ কিনা বলতে পার
মেঘের আড়াল হয়ে।
তোমার অপেক্ষায় চেয়ে চেয়ে
সময় গেল বয়ে।।
এমন দিনে ভাসিয়েছিলে
জীবন নদীর ভেলা।
না বলে যাও একটি কথা
ফিরে যাবার বেলা।।
তোমার আমার হৃদয় মাঝে
নিয়তি সারা বেলা।
জীবন নিয়ে খেলছে শুধু
পুতুল বিয়ের খেলা।।

Wednesday, 15 June 2016

নিপীড়িত ধরণী

নিপীড়িত ধরণী 

আব্দুল মান্নান মল্লিক

নিপীড়িত ধরণী আজ করে দাও শীতল,
বৃষ্টি তুমি ঝরে যাও দিবারাত্রি অবিরল।
গর্জে ওঠো ইচ্ছা যত ফাটিয়ে আকাশ, 
ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও হোক নব উদ্ভাস।
ধুয়ে দাও আবর্জনা পথের ধুলোবালি,
নির্মল হোক ধরণীটা বাগের কুসুমকলি।
হৃদয় প্রাঙ্গণ জুড়ে শয়তান করে বাস,
বজ্রাঘাতে গুঁড়িয়ে দাও পুরা কর আশ।
ধ্বংস কর দুষ্টু আত্মা পাপের খুঁটিনাটি,
নবরূপে আসবে ফিরে দূষণ মুক্ত খাঁটি।
লালে লালে চলছে খেলা হোলি অনর্গল,
অশ্রুজলে মুছে দাও মাতৃভূমির আঁচল।
ফিরে এসে দেখব আবার নতুন সূচনায়,
ওঁজলা মুক্ত হবে খুলে যাবে নব অধ্যায়। 


Tuesday, 14 June 2016

পক্ব কথা

পক্ব কথা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

রঙে ঢঙে যায় কি চেনা
কাঁচা নাকি পাকা।
তাল পাকলে কালো রঙে
চুল কেন হয় সাদা।।
বয়স পাকলে কেমন করে
ভাঙে দাঁতের বেড়া।
একটি বলতে দুটো ফাউ
যায়না বচন ঘেরা।।
সুপারি পাকলে শক্ত কেন
পাকলে নরম আতা।
গাব পাকলে হলুদ বরণ
গুপ্তে পাকে সফেদা।।
তুঁত পাকলে কালো কালো
আরও কালো জাম।
তবে কেন পাকলে এমন
হরেক রঙে আম।।
দিন পাকলে মাসের গঠন
মাস পাকলে বছর।
ঘুমের ঘরে রাত পোহালে
দেখবে কখন ভোর।।
মেঘ পাকলে বৃষ্টি ঝরায়
গর্জে আকাশ ফাটা।
কেমন করে পূর্ণিমা রাতে
চাঁদ পাকলে গোটা।।

Thursday, 9 June 2016

বঙ্গবাসী

বঙ্গবাসী 

আব্দুল মান্নান মল্লিক

স্বর্গ মোদের গর্ব মোদের সবার উপর সেরা,
গাঁ ছেড়ে যায় মাঠপ্রান্তে সবুজ গাছের বেড়া।
চন্দ্র তারায় গগন শোভন ভূমি শোভন ফুলে,
সে তো আমার মাতৃভূমি নীল গগনের তলে।
পি-উ পি-উ পাপিয়া গাহে কুঞ্জবনের আড়ে,
কোথায় যেন ঘুঘুর ঘু লুকিয়ে ঝোপঝাড়ে।
ছন্দে-ছন্দে গুন-গুন ভ্রমর পুষ্প আলিঙ্গনে, 
ফুলের উপর মৌমাছিরা অস্থির মধু পানে। 
পদ্মপাতায় দাদুর বিরাজ ফড়িং ফুলে ফুলে, 
লতাপাতায় সাপ সাপিনী কালো গম্ভীর জলে।
কোথায় পাবে জগৎ জুড়ে বাংলা ভূমির মতো।
সোনার ফসল সবুজ ক্ষেতে দৃষ্টির নাই অন্ত,
বাংলা ভূমির মানুষরে ভাই বাংলার বোল বলি,
মোদের বাংলা গর্ব মোদের মিলেমিশে চলি।
আমরা নিখাদ বঙ্গবাসী তাইতো ভালোবাসি,
সন্ধায় বসে গল্পের আসর চাতালে ঠাঁসাঠাসি। 
কোথাও ঢালু উঁচুনিচু কোথাও জলাভূমি,
কোথাও পাড়ে শস্য ভরা চাষের উর্বর জমি।
নির্জন কোন মাঠের মাঝে বাঁশের বাঁশির সুর,
নীরব রাতে বাতাসে ভাসে দূর হতে বহুদূর। 
একই পথের পথিক মোরা থাকি পাশাপাশি, 
কে-বা ছোটো কে-বা বড় আমরা বঙ্গবাসী। 


Friday, 3 June 2016

বিচ্ছেদ

বিচ্ছেদ

আব্দুল মান্নান মল্লিক

হে বিধাতা তুমি তো সবই পারো,
শীতেল পরশে গড়িলে পুতুল অগ্নিতেও।
রূপান্তর কর সৃজন শীতলায় মন,
গড়ে উঠুক সুখময় দাম্পত্য জীবন।
বুদ্ধি বিবেক সব দিয়েছ দিয়ে যতো ধাতু,
হৃদয় গড় অগ্নি-জলে সব যেন ফালতু।
কেউ বলে সঙ্গিনী কেউ অর্ধাঙ্গিনী,
অনুগ্র হৃদয় কখনো হয় তেজস্বিনী।
স্বীয় হস্তে ভাঙে ঘর ভাঙে শাঁখা চুড়ি,
কপালের রাঙা দাগ মুছে তাড়াতাড়ি।
ললাটে নাই সবে করে আহা মরি,
নিমেষেই ভাঙে দিয়ে তুচ্ছজ্ঞানে তুড়ি।
লাগে যদি মনেমনে দুই মনের টক্কর,
বরফ গলেনা তবু ভাঙে সংসার ঘর।
বেষ্টনীর সীমা ছাড়া পড়ে কারো পা,
তবু দোহে দুষি তারা লিখে যায় বিধাতা।
দুটি মনে বাঁধে বাসা বড় কষ্ট করে,
ক্ষণিকে ভেঙে যায় নিমেষের ঝড়ে।

Tuesday, 31 May 2016

বৃষ্টি ভিজা সকাল

বৃষ্টি ভিজা সকাল

আব্দুল মান্নান মল্লিক

সাতসকালে টুপুর-টাপুর,
টিনের চালে বাজিয়ে নূপুর।
চোখের জলে কান্নাকাটি,
আকাশ গেছে মেঘে ঢাকি।
ওই যে মেঘ মাথার উপর,
সূর্য কোথায় পাইনা খবর।
ঝিমরে পাখি গাছে গাছে,
গান গাইতে বয়েই গেছে।
বাসার পাখি বৃষ্টির দিনে,
উড়বে নাকি ভাবছে মনে।
ঘুম ছাড়েনা মুছিয়ে আঁখি,
দেখছি ভাবছি স্বপ্ন নাকি?


Monday, 30 May 2016

√ নব বিকাশ

নব বিকাশ

আব্দুল মান্নান মল্লিক

হৃদয় মাঝে রাখবো তাদের,
দুর্বল যারা মানব অসহায়।
করবো নশ্বর ভয় আতঙ্কের,
তাদের পাশে আমরা সহায়।।
রাহাজানি আর দাগাবাজ,
কষ্টি শিলাই করবো যাচাই।
বিকাশ হবে নতুন সমাজ,
দেখবো সেদিন খুশি সবাই।।
শ্রেষ্ঠ জীবের করবো প্রমাণ,
মানুষ সবাই করবো প্রচার।
জাত বিচারে মানুষ সমান,
দূর করবো বিরোধ অনাচার।।
নির্ভীক সবে পেরিয়ে আঁধার,
জ্বালিয়ে দিবো দীপ্তি নিশান।
করবো মানব জাতির সংস্কার,
গোঁড়ামি পথের হবে অবসান।।
ভেদাভেদ ছেড়ে সঙ্ঘবদ্ধ,
উদ্ভব করবো নতুন প্রচার।
থাকবেনা কোনো গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব,
রবেনা ভেদ জাতির বিচার।।
দেখবো জগত নতুন করে,
খুঁজবো এবার আলোর উৎস।
আঁধার পথের প্রদীপ ধরে,
দেখবো কোথায় গুপ্ত রহস্য।।
ছেলে বুড়ো দেশের জোয়ান,
করবো মিলে বিভেদ মোচন।
হিন্দু মুসলমান জৈন খৃষ্টান,
করবো প্রচার নতুন সূচন।।

Saturday, 28 May 2016

নকশা ঘর

নকশা ঘর

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ভাবনা শুধু তোমার কথা
আকাশ চেয়ে থাকি।
ভাসা মেঘে মিলিয়ে আমি
তোমার ছবি আঁকি।।
হয়তো তুমি আসবে কাছে
খোপায় গাঁদা ফুলে।
নইতো তুমি আসবে ছুটে
উড়িয়ে এ্যালো চুলে।।
আলতা পায়ে লাল শাড়িতে
বাজিয়ে নূপুর ধ্বনি।
হঠাৎ কখন আসবে তুমি
চেয়ে প্রহর গুনি।।
বলতে চাওয়া কথা সেদিন
চাপা ছিলো বুকে।
কিছু কথা বলতে হারাও
মিষ্টি হাসির ফাঁকে।।
চেতনে তুমি স্বপ্নে তুমি
হৃদয় মাঝে তুমি।
তোমায় নিয়ে স্বপ্ন গড়ি
তাইতো অনুগামী।।

Friday, 27 May 2016

শৈশবের ভাবনা

শৈশবের ভাবনা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

আকাশ তুমি অনেক দূরে
যেতে বড় ইচ্ছা করে।
ভাবছি বসে তোমার কথা
কোন পথে যায় উড়ে।।
দেখবো কেমন তারার ঝাঁক
জোছনা ছড়ানো চাঁদ।
হাসবো গাইবো খেলবো সাথে
কাটিয়ে দিবো রাত।।
হারিয়ে যাওয়া খেলার সাথি
তোমার কাছে নাকি।
মা বলেছে এই কথাটি
তাইতো চেয়ে থাকি।।
বলে দাওনা আকাশ তুমি
পাই যদি তার দেখা।
তোমার কাছে উড়ে যাবো
মেঘের পথে একা।।
ফেলে যাওয়া খেলনা যতো
গুছিয়ে নিবো সাথে।
সাথির কাছে যেতে আমার
ভয় করেনা রাতে।।

Thursday, 26 May 2016

মেঘের কুরুধ্বনি

মেঘের কুরুধ্বনি

আব্দুল মান্নান মল্লিক

মেঘ করেছে পূব আকাশে
কালো অন্ধকার।
কলি খেলায় বেজে ওঠে
নভ ঝঙ্কার।।

কিছু কালো কিছু আলো
মতের নাই ঠিক।
প্রাতকালের আকাশ বুঝি
পাইনা খুজে দিক।।

তর্জনগর্জন কেবলই সার
বৃথাই আস্ফালন।
কুরুধ্বনি আর আতশবাজি
জলেতে অকুলন।।

তোমার দিকে চেয়ে ধরণি
হবে বুঝি শীতল।
অবশেষে শুকনো পাতাই
পারনি দিতে জল।।


Tuesday, 24 May 2016

অসহায়

অসহায়

আব্দুল মান্নান মল্লিক

আমি ঝরে পড়া পুষ্পদল,
ভেসে যায় অসহায় নির্জীব জলস্রোতে।
বাধা পড়ে যায় কখনো
মাথা জাগানো আবর্জনা ঘাসে।
হংসের দাপাদাপিই ঘোলা জল গায়ে মেখে
স্রোতের ঘাতে ঘাতে বাধাবিঘ্ন পেরিয়ে
যেতে চাই আমি এক উদ্দেশ্যের পথে।
স্রোতের টানে ভেসে যায় ইচ্ছার বিপথে।
আশার আলোর পাইনি দেখা বৃন্তযুক্ত গাছে,
তবু কেন আশা মনে ছিন্ন জলস্রোতে?
অস্থিরের জীবন শুধু আশার সন্ধানে,
বৃথাই চক্রাকার জীবনের পথে।
হয়তো বা গতিপথে কোথাও পথে,
পলিতে পড়িবো ঢাকা দাঁড়িয়ে নিস্পন্দে।

Sunday, 22 May 2016

জ্যৈষ্ঠকান্তি

জ্যৈষ্ঠকান্তি

আব্দুল মান্নান মল্লিক

জ্যৈষ্ঠ মাসের মিঠাই গন্ধে
উল্লাসিত সবাই।
গল্প কথায় দিন কেটে যায়
ছিন্ন মেঘের ছায়ায়।।

উল্টো সিধা বইছে বাতাস
আকাশ ছেয়ে চাতক।
মাছরাঙাটি পাড়ের গাছে
জলের ধারে বক।।

গরুগুলো মাঠের মাঝে
বাগাল ছায়াতলে।
দড়ি বেধে গাছের ডালে
খেলছে ঝুলে-ঝুলে।।

শাক তুলতে চাষির মেয়ে
ওই যে দূরের মাঠে।
হাঁটু পাটের জমিয় ঢুকে
পাটের মুণ্ডু কাটে।।

ছুমাই দাদু হাঁটছে লাঠিয়
গায়ের জামা কাঁধে।
হয়তো যাবে জামাই বাড়ি
মিঠাই হাঁড়ি বেঁধে।।

কাক কুলায়ে কোকিল ছানা
আদরে বড় করে।
বোকা কাক বুঝলনারে
কষ্টে খেটে মরে।।

বাবুই পাখি বাসা বাঁধে
অতি সুন্দর করে।
বোকা বাবুই বাসা ছেড়ে
ভুগছে বৃষ্টি ঝড়ে।।

Saturday, 21 May 2016

বহুরূপী

বহুরূপী

আব্দুল মান্নান মল্লিক

বেঁচে থাকা অনেকদিন,
মরলেইবা একদিন।
এতোদিনে করেছি কি,
বেঁচে থাকা কি জরুরি।
কিসের আশায় কিসের নেশাই?
খেলে গেলাম সর্বনাশাই।
আমরা সবাই মানবরূপী,
সত্য কথায় বহুরূপী।
বেচাকেনায় ধর্মের কাঁটা,
তবুও ওজন ভারা ছাঁটা।
চক্রে ঘুরি সুযোগ কোথায়?
জাতকূলমান থাক বা যায়।
দিনেরাতে রঙ বদলায়,
সমান ভাসি জোয়ারভাটায়।
নিজের আগুনে নিজে পুড়ি,
মিছরি ছুরিই ঘোরাঘুরি।
লোক দেখানো ভালোবাসায়,
সেলাম পেলাম বাবুমশাই।
কলির কালি গায়ে মাখাই ,
এই নিয়ে কি বাঁচা যায়?
এইতো আমরা মানুষ সবাই,
বল বেঁচে লাভটা কোথায়?
পথ ছেড়ে যায় অলিগলি,
কেমন করে মানুষ বলি?


Sunday, 15 May 2016

বাধন হারা

বাধন হারা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

কখনো নিজে মন উদাসী,
কখনো ভাবি পাগল আমি।
কখনো ভাসি ওই আকাশে,
ডানা মেলেছি চাঁদের দেশে।
সবুজ গাছের মাথায় মাথায়,
বৈশাখ মাসে মেঘের ছায়ায়।
পড়বো না আর খাঁচায় ধরা,
আজকে আমি বাধন হারা।
থাকবো না আর অন্ধ ঘরে,
যেথায় সেথায় বেড়ায় ঘুরে।
ওই দেখা যায় জগত পারে,
সেথায় যাবো নিজের ঘরে।
বানিয়ে রাস্তা সুড়ঙ্গ তলে,
নইলে যাবো ভেসে জলে।
শুকিয়ে পাতা যখন ঝরে,
গাছের ক্ষমতা রাখবে ধরে?


Wednesday, 11 May 2016

দুষ্টু ভোমরা

দুষ্টু ভোমরা (b.k)

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ওরে দুষ্টু কেলো ভোমরা,
ঢুকিসনা পুষ্পবাগে।
কলঙ্ক দাগ মুছবেনা আর,
যদি একবার লাগে।
বাগান ভরা ফুলগুলো সব,
করে হাসাহাসি।
ওরে দুষ্টু সুযোগ খুজিস,
কেমন করে আসি।
রঙিন রঙিন পুষ্প কুসুম,
ছুলে কেলো রঙে।
মলিন হবে ফুলের বাগান,
পাপড়ি যাবে ভেঙে।
ফুলের উপর ঘোরাঘুরি,
বসিস যদি ফুলে।
ধরতে যদি পারি একবার,
মারব আছাড় তুলে।
করিসনা আর উড়োউড়ি,
বাগানের আশপাশ।
এমন করে মারব তোরে,
করব মরণলাশ।
দুষ্টুমি আর জহর জ্বলন,
রঙের কত বাহার -
ছেঁচন দিয়ে করবো শোধন,
আঁধার পরিষ্কার।
ধারের কাছে দেখি যখন,
পিত্ত যায় জ্বলে।
নলশুঁড়োটা মুচড়ে দিবো,
ডুববি লোনাজলে।

Tuesday, 10 May 2016

গায়ক পাখি দোয়েল

গায়ক পাখি দোয়েল (prapti)

আব্দুল মান্নান মল্লিক

গানে গানে ডাকছি তোমায়,
কবি বন্ধু আমার।
রাত বহিয়া ভোরের বেলা,
ঘুমাও কেন আর?
আমায় নিয়ে অনেক কথা,
লিখছো কবিতায়।
তাইতো আমি চোখ মেলেছি,
ডাকি ভোরবেলায়।
বন্ধু যখন কলম খাতায়,
বকুল তলে ছায়ায়।
আমি তখন শাখায় শাখায়,
আনন্দে গান গায়।
আমি নাকি দোয়েল গায়ক,
খাতার পাতা জুড়ে।
তাইতো কাছে আসি বন্ধু,
যখন তখন উড়ে।
শালিক পাখির কিচিরমিচির,
লিখতে কাঁপে হাত।
গায়ক পাখি আমার কথা,
লিখছো দিবস রাত।
লিখবে তুমি গাইবো আমি,
ছন্দে ছন্দে সুরে।
ভরিয়ে দিবো আকাশ বাতাস,
গাঙের ওই পারে।
প্রণাম জানাই কবি বন্ধু,
আর তো কিছু নাই।
তুমি লেখক দোয়েল গায়ক,
তোমার কবিতায়।

Monday, 9 May 2016

সময়ের মর্যাদা

সময়ের মর্যাদা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

রাতের ঘুম হারায় চাঁদের আলোয়,
দিনের ভাবনা যত পথের ধুলোয়।
কুরে খায় বক্ষপিঞ্জর দিনে ও রাতে,
আশ্বাস কথা নিয়ে তোমাকে ভাবিতে।
ডানা মেলে উড়ে মন কখনো উদাসী,
অঠাঁয়ে ফাঁকা সব আমি শুন্যে ভাসি।
খালি মোর হৃদাঙ্গন ধরেছি নেত্রপাতে,
রাতদিন কাটে মোর তোমার আশাতে।
জেগে থাকা স্বপ্ন যেন প্রণয় বিফল,
অবসে ভাসে জীবন নির্জীব অবিকল।
এমনি ফুরাবে সময় জমা ছিল যত,
জীবনের প্রথম পদে দিয়েছিলাম শর্ত।
মেঘে ঢাকা সময় যেন আড়ালে লুকায়,
অসময়ে হারায় সময় বড় ভাল একাই।
কাউকে ভাবিনা তাই সময় যায় বয়ে,
রাখিতে পারিনা ধরে বড় মূল্য দিয়ে।