Monday, 29 February 2016

ধন্য তোমায় দেখে

ধন্য তোমায় দেখে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

আর চেয়োনা মাগো তুমি
দিওনা চোখে চোখ।
চোখের জলে পিছল হবে
আমার চলার পথ।
আবার আমি আসবো ফিরে
নতুন হয়ে কোলে।
সেদিন আবার হাসবে তুমি
কেঁদোনা অশ্রুজলে।
চিনতে সেদিন ভুল করনা
দেখবে চুমো গালে।
অধর দুয়ের পরিচয় নিও
যেওনা মোরে ভুলে।
ধর্ম পুস্তক পাঠ করে যাও
পাড়ার লোক জনে।
শান্তনা দাও মাকে আমার
আত্মীয় সজ্জনে।
হাসি মুখে দাওগো বিদায়
নইলে ক্ষুব্ধ বিধি।
ধর্মের বাণী শুনাও সবাই
বসে নিরবধি।
তোমায় পেয়ে ধন্য মাগো
বিধির মহত্ দান।
এক পলকের দেখা তবু
বিধির গুণগান।

Saturday, 27 February 2016

নাইবা তুমি এলে

নাইবা তুমি এলে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

বড়াই কর মিছে কোকিল,
ভাবছ বসে ডালে।
আসবে ফিরে বসন্ত আবার,
নাইবা তুমি এলে।
অসময়ে দেখেছি তোমায়,
শীত বর্ষাকালে।
বসন্ত তোমায় আছে ভুলে,
নাইবা তুমি এলে।
কোকিল যদি নাইবা আসে,
শাপলা ফুটবে জলে।
বসন্তবৌরি নাচবে গাইবে,
নাইবা তুমি এলে।
রাখাল ছেলে বাজায় বাঁশি,
মাঠে বৃক্ষতলে।
বক উড়ে যায় গগন তলে,
নাইবা তুমি এলে।
পাড়ার মেয়েদের ছুটোছুটি,
খোপায় রঙিন ফুলে।
ছেলের হাতে মুড়ির নাড়ু,
নাইবা তুমি এলে।
থাকো তুমি নাইবা থাকো,
এই বসন্ত কালে।
শাখায় শাখায় নব পল্লব,
নাইবা তুমি এলে।
দখিণা বাতাস বয়বে তবু,
দিবা নিশি কালে।
গাইবে পাখি ফুটবে ফুল,
নাইবা তুমি এলে।
রঙবেরঙের ফুলগুলি সব,
বাতাস ধরে দোলে।
শিমুল ফুলে রঙ ফিরেছে,
নাইবা তুমি এলে।

Friday, 26 February 2016

রুদ্ধালয়

রুদ্ধালয়

আব্দুল মান্নান মল্লিক

কখনো হারিয়ে যায় ঝড়ঝাপটায়,
কখনো হারায় আমি শিশির ধোঁয়ায়।
নীড়ছাড়া পাখি আমি যদি পাই ঠাঁই,
যতো আছে বেদনা সব ভুলে যায়।
পুড়ে ভষ্ম মন যেথা অনলের দাহে,
তবু কেন চায় মন ফিরিতে স্বগৃহে।
প্রীতির বন্দিশালা তাই সবে অন্ধ,
ঘর হতে বেরিয়েছি করে দ্বার বন্ধ।
অন্ধকারে ফেলে আসি নির্জন ঘর,
বহিবেনা বায়ু আর খুলিবেনা দোর।
ছিন্ন-ভিন্ন ছিদ্র করে কীটাণুদের বাস,
নরখাদক পশু হয়তো করিবে গ্রাস।
মাটিতে মিশে হবে দেহ মাটি সার,
তবু কেন করে মন এত অহংকার।

Thursday, 25 February 2016

আজ বসন্ত

আজ বসন্ত

আব্দুল মান্নান মল্লিক

আজ বসন্ত চিরসত্য।
বাংলার চরিত্র বাংলার চিত্র
আবার নতুন সাজে সজ্জিত ।
যেমন দেখেছি আগে,
আজও তেমনিভাবে ।
মৌ-মৌ গন্ধে সারা বাংলা ভরে উঠেছে।
শাখায় শাখায় রঙবেরঙের পাখি,
গাছে গাছে রংবেরঙের ফুল ফুটেছে।
ফুরফুরে মন জুড়ানো হাওয়া।
আহাঃ!
কেমন করে চুপ থাকতে পারে বাংলা,
মাধুরী এই মৌসুমে!
যুগযুগান্তর কত সময় মাড়িয়ে
আজও চলে আসছে চিরনব যৌবন রূপে
এই বসন্ত,
চির অনন্ত চির পরিচিতি।
বসন্তের ছোঁয়ায় আজ উঠেছে জেগে
বাংলার প্রাণের অনুভূতি।
জেগে উঠেছে নিষ্প্রাণ, বসন্তের আগমনে,
অনুভূতি উজ্জীবিত সবার মনে।

Wednesday, 24 February 2016

√ আমাদের বাংলা

আমাদের বাংলা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

বাংলা দেশের মানুষরে ভাই,
বাংলা কথা বলি।
একটি সুতোই বাধা জীবন,
সোজা পথে চলি।
এমনটি আর পাবেনা খুজে,
ধরাধামের মাঝে।
বিরামহীনে কাজের শেষে,
প্রদীপ জ্বলে সাঁঝে।
গৌরব করে বলতে পারি,
সেদিন আছি ভুলে।
কিসের চিন্তা কিসের দুঃখ,
অধুনা কলি কালে।
যেমন ছিল তেমনি আছে,
নাইকো সেই দুখ্।
কান্না ছেড়ে হাসির পুলক,
বাংলা মায়ের মুখ।
ভোরের শিশির চমক মারে,
প্রাতে সবুজ ঘাসে।
বাংলা মায়ের আরও ভালো,
বসন্ত যখন আসে।
বৃক্ষশাখে লুকিয়ে কোথায়,
কোকিল কুহু ডাকে।
তাইতো সবাই প্রণাম করি,
আমার বাংলা মাকে।
প্রজাপতি উড়ে বেড়াই,
ফুলের রং মেখে
শিমূল ফুলে কেচরমেচর,
শালিক বসে ঝাঁকে।
হাসনাহেনা শিউলি ফুলের,
গন্ধ ছড়াই রাতে।
কৃষ্ণচূড়ায় রঙ জেগেছে,
রাধাচূড়ার সাথে।
চাঁদের আলো শিশুর হাসি,
বাংলা মায়ের আদর।
ফুলে ফুলে পাখির গানে,
তাইতো এতো কদর।
টিয়া ফিঙে দোয়েল বাবুই,
বুনো পখিদের গান।
চোখ ধাঁধানো ফুলের বাহার,
জুড়িয়ে যায় প্রাণ।


Sunday, 21 February 2016

চানাচুর ওয়ালা

চানাচুর ওয়ালা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

এম কে রায়ের চানাভাজা
সবার জানা খেতে মজা।
পাড়া গাঁয়ের অলিগলিতে
বেচি বাসে রেলগাড়িতে।
চাই চানাচুর চাই চানাচুর
সুগন্ধ আর স্বাদে ভরপুর।
লেবেল সাঁটা রায়ের নাম
খাওয়ার পরে তবেই দাম।
টক ঝাল আর লবণ মাখা
মজার খাস্তা টকের চোখা।
ছোট বড়তে হরেক রকম
মোড়ক বোঝাই দামে কম।
যেমন ইচ্ছা চাইলে পাবে
বাচ্চা জোয়ান সবাই খাবে।
পাঁচ মোড়কে একটা ছাড়
বেচবো নগদ নাইকো ধার।
ভালো নইলে মূল্য ফেরত
বেচবোনা ভাই করি শপথ।

Saturday, 20 February 2016

স্বপ্নের দেশে

স্বপ্নের দেশে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

কোনো এক অজানা পথ বেয়ে
দূর হতে বহুদূর, আরও অনেক দূরে,
রোদ দুপুরে।
বসে আছি বিজনে একা,
অজানা বৃক্ষ ছায়াতলে।
নিঝুমপুরী অজ্ঞাত এক দেশ
সাদা কাক এক নিরানন্দ নীরবতায় বৃক্ষশাখে।
কখনো দেখিনি আগে।
অলীক দৃশ্যপথে হারিয়ে খুজি পইপই আপনারে।
আছি কিনা হারিয়েছি, কোনো অজানায়
নির্জন প্রান্তহীন দেশে।
কখনো আস্থা, কখনো অনাস্থা,
কখনো দীর্ঘশ্বাস শঙ্কাতে!
ক্ষণকাল পরে,
ঝুমুরঝুমুর নূপুর ধ্বনিতে
স্বর্ণকলস কাঁখে।
স্বপ্নপুরীর নীলা পরী চার রমনীর সাথে।
জল ভরিতে আসে
পদ্মদিঘি রাঙা মাটির ঘাটে।
গা শিহরণ ভয় ঝাঁকুনি বাঞ্ছা তবু মনে,
ডাকবো নাকি কাছে?
উড়িয়ে দিবে ভস্ম করে দরকার নাই কাজে,
কোন দিকে যায় পথ হারিয়ে
একা মাঝমাঠে
ভেবে ভেবে ঘুমিয়ে পড়ি বৃক্ষ ছায়াতলে

Friday, 19 February 2016

গন্ধ আজও বাতাসে

গন্ধ আজও বাতাসে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ঝরে গেছে কত পুষ্প কুঁড়িতে
কেউবা ফুটিতে ফুটিতে।
স্বীয় চোখে দেখেছি এমনি কত
পারিনি একটিও রাখিতে।
ঝরে যদি শৈশবে, বক্ষ কলিকা
তবু কেন শোকাহত কষ্ট।
মুহুর্ত কাল ছিল জড়ায়ে বক্ষে
এটাও কি নই যথেষ্ট?
ইচ্ছা হতো বিধির এমনও যদি
না আসতো পুষ্পকলি।
মানিতে বাধ্য তবু, হয় নিরুপায়
হৃদয়ের মাঝে খালি।
একটি একটি ঝরে পড়বে সব
একদিন আমি ও তুমি।
পড়ে থাকবে আচরণ তোমার
করেছ সুনামি বা দুষ্টুমি।
যেই পুষ্প হয়েছে বিলীন কবে!
তবু গন্ধ আজও বাতাসে।
সারি দিয়ে আসে আবার ওই,
শূন্যগর্ভ পূরণের আশে।
থেকে যাবে যুগে যুগে অনশ্বর,
কেউনা কেউ বংশধর।
ইচ্ছা যদি কর তুমি, হবে নশ্বর
হে করুণাময় ঈশ্বর।

Monday, 15 February 2016

√ সাবধান

সাবধান

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ধুলোবালিয় পড়ে আছিস ধনির পদতলে,
ধনশালী ধনের ভাণ্ডারী জ্ঞাতিত্ব যায় ভুলে।
বিকলাঙ্গ পীড়িত কেউ, কেউ অন্ধ ভিখারী,
ক্ষুধিত নিপীড়িত কেউ লাঠিতে পথচারী।
দেখেনা বাবুরা তাদের দৃষ্টি দিয়ে নীচে,
দুখীরা বাঁচতে আশায় ধনির মুখ চেয়ে।
তুলে নিতে চাইনা ওদের দুহাত বাড়িয়ে,
ফেলে যায় পরিচয়হীনে দুপায়ে মাড়িয়ে।
বলে যায় একটি কথা থাকিসনা পদতলে,
ছোটলোকের দল ওরে এলে অবহেলে।
ধনিদের সুখ দেখতে বেঁচে কেন তোরা,
শক্তি ধরে উঠে দাঁড়াস হসনে মনমরা।
ভাবিস কেন সুখী তোরা ধনির সুখ দেখে,
মরে যাস্ থাকিসনা আর ধুলোবালি মেখে।
শুভাকাঙ্ক্ষী হসনা আর ধনশালীর তরে,
স্বত্ব ধরে উঠরে এবার ধুলোবালি ঝেড়ে।
মনে রেখো একটি কথা ধনশালীর দল,
ধনের পাষাণ চাপায় হবে জীবন বিফল।
সম্পদের বাঁধ একদিন দাঁড়াবে পাহাড়,
উপরে পড়বে সেদিন পাবেনা নিস্তার।
সময় থাকতে ধনকুবের সাবধান হও,
দুহাত বাড়িয়ে ডাকলে আসবেনা কেউ।

Friday, 12 February 2016

ফিরিয়ে দিওনা আর

ফিরিয়ে দিওনা আর

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ফিরিয়ে দিয়েছ কতবার,
তবু আসি ফিরে ফিরে
বন্ধ দুয়ারে তোমার।
দিওগো সেদিন বন্ধ দ্বার খুলে,
দিওগো হৃদয় সিক্ত করে
যেদিন আসিব আবার।
ফিরে যেতে চাইনা বারবার
দিওনাগো দিওনা ফিরিয়ে আর,
তুলে নিও দুটি হাত ধরে।
ধুলিব্যাস কোণা সম, মম দিও ঠাই
গহিন হৃদয় অন্তরে।
আশা এই অনুমাত্রায়।
গুঞ্জনি ভ্রমর গুঞ্জরিয়া আসে
প্রস্ফুটিত পুষ্প সুবাসে।
উড়ে যায় পুষ্পরেণু গায়ে মেখে
যায় কি, খালি ফিরে।
অদূরে যায় তবু, সুবাস লালসে
বারবার ফিরে আসে।

Thursday, 11 February 2016

বাঁশরিয়া বাজাও বাঁশি

বাঁশরিয়া বাজাও বাঁশি

আব্দুল মান্নান মল্লিক

বাঁশরিয়া বাজাও আবার,
মিষ্টি সুরের বাঁশি।
তোমার বাঁশির সুরে সুরে,
মন হলো উদাসি।
বাঁশের বাঁশি বাজাও যখন,
বেঙের হাততালি।
খোলামকুচি নাচে পথের,
নাচে ধুলোবালি।
ফড়িং নাচে ঘাসের উপর,
ভ্রমর নাচে ফুলে।
হরিণ হরিণী নাচছে বনে,
বিহগ নাচে ডালে।
তোমার বাঁশির সুরে নাচে,
স্বর্গের অপ্সরী।
আরও নাচে পুকুর পাড়ে,
সুন্দরি দুই পরী।
গাছতলাতে বাজাও বাঁশি,
মন করে আনচান।
মন লাগেনা কাজে আমার,
হারায় কুলমান।
মজুর বাড়ির বউগো আমি,
মোড়ল বাড়ির ঝি।
বাঁশির সুরে পাগলি হলাম,
বলবে লোকে কি?

Wednesday, 10 February 2016

বাহার মল্লদার

বাহার মল্লদার

আব্দুল মান্নান মল্লিক

মুষ্টি যুদ্ধ করিনা আর।
আমি চেনা কুস্তি মল্লদার।
পাড়াই ডাকে মল্ল বাহার।
আসল নাম বাহার মল্লদার,
মল্ল ময়দান সবটা আমার,
মাঠে নাই আমার জুড়িদার।
এক ডাকেতে জানা সবার,
আমি চেনা কুস্তি মল্লদার।
লড়াই দেখতে ব্যস্ত সবাই,
খাটো মানুষ খুঁড়িয়ে দাঁড়াই।
লড়াই লড়াই লড়াই চাই,
মল্লদারের জুড়িদার নাই।
দিনটা সব হল বেকার,
আমি চেনা কুস্তি মল্লদার।
তাল ঠুকি আর কপনি মারি,
কখনো মাঠে দৌড়াদৌড়ি।
ডাকতে জুড়ি ইশারা করি,
ভয়ে সব পালায় বাড়ি।
কেউ আসেনা ভয়ে আর,
আমি চেনা কুস্তি মল্লদার।
জোড়ায় জোড়ায় মল্লদারী,
তবেই মজার লড়ালড়ি।
লড়াই ছাড়া ফিরবো বাড়ি,
ছিঃ, ছিঃ, ছিঃ লজ্জাই মরি।
মল্ল জুড়ি নাই আমার,
আমি চেনা কুস্তি মল্লদার।





Monday, 8 February 2016

নিষ্ফল ইচ্ছা

নিষ্ফল ইচ্ছা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

স্বপ্নপুরীর গল্প কথার
নীলা পরীর দেশ,
ইচ্ছা করি যাবো সেথায়
দেখবো পরিবেশ।
ইচ্ছা মতো পারতাম যদি
ঐ আকাশে উড়তে,
ইচ্ছা আবার হয় কখনো
জলে ভেসে ঘুমাতে।
মেঘ হয়ে উড়বো ভাবি
ঐ দূর আকাশে,
কখনো আবার ইচ্ছা করি
উড়ে যায় বাতাসে।
পুষ্পপত্রে মিশিয়ে ডানা
প্রজাপতি হয়ে,
কলঙ্কিত বলুক সবাই
ফুলের রঙে দেখে।
চুপিচুপি বলবো আমি
ফুলের কানেকানে,
জমানো রাখা যত কথা
মিষ্টি সুরের গানে।
দিবানিশি ইচ্ছার সাথে
পারিনা তবু চিনতে,
মিনতি করি ইচ্ছার কাছে
চাইনা সে মানতে।

Sunday, 7 February 2016

উৎপাত

উৎপাত

আব্দুল মান্নান মল্লিক

উৎপাত আর সইবো কত
দিবসও রাতে অবিরত
কাঠঠোকরার ঠকঠকানি
রাতে ঝিঁঝিঁর ঝিনঝিনানি
পথের উপর দেখলে পরে
হুনুমান টানে কাপড় ধরে
পাখি ডাকে বাঁশ কোটার
সারা রাত্রি ঠোকার ঠোকার
পেঁচা ডাকে কেঁচর-কেঁচর
বিড়াল শুয়ে কাঁথার ভিতর
কর্কশ কণ্ঠে ডাকছে বাদুড়
উৎপাত করে ধেড়ে ইঁদুর
শালিক পাখিদের মারামারি
খাবার নিয়ে কাড়াকাড়ি
মারামারি আর হানাহানি
কাক পাখিদের শয়তানি
ছুমাই বুড়ো বাড়ির পাশে
দিনে ঘুমোয় রাতে কাশে
শিয়াল ডাকে হুক্কা-হুয়া
কুকুরগুলো করে ধাওয়া
মশাগুলো সুযোগ খুজে
দিচ্ছে কামড় বুঝেশুঝে
কতো আর সইবো জ্বালা
রাত কিংবা দিনের বেলা

Friday, 5 February 2016

ভূষণের কদর

ভূষণের কদর

আব্দুল মান্নান মল্লিক

গেঁয়ো ছেলে অল্প বিদ্যা গাঁয়ে করি বাস,
আমি ছাড়া গাঁয়ে সবাই মাঠে করে চাষ।
লেখাপড়া অল্প জানি করিনি তাই দাবি,
তবু কেন বলে সবাই আমি নাকি কবি।
পুঁথির উপর জুড়ে দিই নিজের এক ছবি,
আঙুল দেখায় বলে সবে ওই দেখ্ কবি।
দূরদর্শনে হবে প্রকাশ কোনো একদিন,
চোখ মেলে চেয়ে সবে কাটায় সারাদিন।
জানা নাম মুছে সবাই ডাকে কবি ধন্য,
কি করে বলি ওদের অল্প বিদ্যা নগণ্য।
লজ্জায় পড়েছি তাই উপায় কিছু করি,
অল্প বিদ্যায় নিরুপায় হাতে কলম ধরি।
কিছু গল্প কিছু কল্প কিছু কাহিনী কথা,
ছিন্ন ছন্দ ভিন্ন কথাই ভরে দিই খাতা।
মুখ ভরা দাড়ি আর পাজামা পাঞ্জাবি,
তাই বুঝি ভাবে ওরা হয়ে গেছি কবি।
রব ওঠে পাড়াই পাড়াই আর মাঠেঘাটে,
ধন্য ধন্য বলে লোকে ছেলে একটা বটে।
ডাকে সবাই কবি নামে লজ্জাই মরি,
বিদ্যা পেটে নাই আমার উপায় কি করি।
ছেড়ে দিই সৌখিন বেশ পেন্ট সার্ট পরি,
কবি নামে ডাকেনা আর ইচ্ছাতে ঘুরি।

Wednesday, 3 February 2016

লোহিত নদীর তীরে

লোহিত নদীর তীরে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ঘর বেঁধেছি ছোট্ট পাখি,
লোহিত নদীর তীরে।
দুটি আঁখি বাইরে রাখি,
একটি অন্তর জুড়ে।
একটি অন্তর চৌকিদারি,
দুটি বাহ্যিক বাড়ি।
চুপটি মেরে সুপ্তি আমি,
তোমরা পথচারী।
গুনণ খাতা হাতে ধরি,
ছোট্ট পাখি নীরব।
ভাবছ বসে মিছামিছি,
করছ তুমিই সব।
বইছে স্রোত ধকধকানি,
ভাঙে নদীর তীর।
অরবে আমি বসে সেথা,
ছোট্ট আমার নীড়।
ঢেউয়ে দোলে কাঁচা ঘর,
তবুও আমি অনড়।
জোয়ার ভাটা বন্ধ হলে,
ছাড়বো কাঁচা ঘর।
জ্ঞান গবেষক তান্ত্রিকেরা,
আজও তারে খুঁজে।
চেষ্টা বিফল বৃথাই জীবন,
আসেনি তবু বুঝে।

Tuesday, 2 February 2016

রাতের আহ্বান

রাতের আহ্বান

আব্দুল মান্নান মল্লিক

লোকমুখে শুনেছি ভুতের কতো গল্প,
নিজ চোখে দেখেছি কিছু তার অল্প।
মেঘ বৃষ্টির অবসরে ঘরের দরজায়,
করাঘাতে ডেকে বলে আমি কানাই।
দোর খুলে দাঁড়িয়েছি যেই বারান্দায়,
উঠানে দাঁড়িয়ে কেউ ছায়া আবছায়!
বৃষ্টি ভাঙা রাত আঁধার লাগে বড় ভয়,
অস্পষ্টে যায়না চেনা কি জানি কে হয়।
শিহরণী গা ছমছম সারা শরীর কাঁটা,
ভয়ে দেখি জগৎটা হয়ে আছে উলটা!
চুপি ডাক দিয়ে বলে আয় মোর সাথে,
আম চুরিতে যাস যদি এই মাঝ রাতে।
আম বড় ভালোবাসি জানতো কানাই,
বিশ্বাস করেছি তাই সন্দেহ আর নাই।
ধীর পায়ে যায় কাছে দেখি অস্থি রূপ,
হাত দুটি ধরে বলে করিসনা ভয় চুপ!
দেখিতে ইচ্ছা যখন হয় রাত্রিকালে,
তাই বন্ধু ছুটে আসি কানাই-এর ছলে।
চেয়ে দেখ চেহারাখানা অস্থিদেহ সার,
আমি তোর মৃত বন্ধু রতন স্বর্ণকার।

Monday, 1 February 2016

আমরা মানুষ

আমরা মানুষ

আব্দুল মান্নান মল্লিক

এমনতো ভাববো না কখনো
হবে যেটা বৃথার কারণ,
এমন কিছু করবোনা কখনো
ছিন্ন হবে নরত্বের বন্ধন।
মিথ্যা বচন গাইবো না কখনো
যত আসে আসুক বিপদ,
অসৎ পথে চলবো না কখনো
করি জীবন মরন শপথ।
ভাঙবোনা কখনো বিধান শাস্ত্র
না হয় ধর্মের অপমান,
তুলবোনা হাতে ধারালো অস্ত্র
রক্ষা হবে নিরীহর প্রাণ।
নিয়ন্ত্রণ স্বত্ব করবোনা লঙ্ঘন
রক্ষা করবো মানব বিধান,
রোষাগ্নি চিত্ত করবোনা পালন
বিক্ষুব্ধ অগ্নি করবো ম্লান।