Saturday, 25 July 2015

তুমি নেই আজ

তুমি নেই আজ

আব্দুল মান্নান মল্লিক

হরষিত মন ফিরে নব যৌবন,
মৃদু বাতাসের ঢেউয়ের দোলায় হৃদয় স্পন্দন।
ইশারায় দেয় ডাক বারবার পিছনে
ফেলে আসা তারুণ্যে।
আঁক দিয়ে বাতাসে, যেন এক অজানা পাখি
থাকতো যদি সাথে, হারানো দিনের সাথী!
কৃষ্ণচুড়ার রং ঝরে যায় বাতাসের দোলে,
বিহগ বিহগী জোড়া ডালে, আমি গাছতলে।
ইচ্ছা করে কখনো বিহগ বিহগীর মত,
তোমার পরশে পুনঃ নিভা তারা জ্বলতো।
সারস সারসী মাঠের প্রান্তরে,
দুটি দুটি গুটি পায়ে, মরা গাঙের তীরে।
দূর হতে পিছনে ডাক দিয়ে কে বলে
এইতো তোমার আমি,
দিওনা সাঁতার আর নয়নের জলে!
চেনা সেই কণ্ঠ আবার বিগতের পরে
স্বীয় জল গড়ে পড়ে, চেনা স্বর কর্ণগোচরে!
কোন্ প্রান্তে বিরহী তুমি রয়েছ কোথা,
বারবার কাঁদাও মোরে ইশারায় বৃথা!
আমি কি উন্মাদ? জাগ্রত না ভাবনার পরিহাস?
হৃদয়ের বহির্গমনে শুনি নিয়তি করিছে উপহাস!

Friday, 24 July 2015

√ বাংলার বৈশিষ্ট্য

বাংলার বৈশিষ্ট্য

আব্দুল মান্নান মল্লিক

বাংলা ভাষা বাংলার গান,
কাব্যের কথা বাংলার প্রাণ,
ভরিয়ে দিব সারাটা ভূবনে।।
পদ্মা, গঙ্গার উজান ভাঁটায়,
ভাটিয়ালি গান গেয়ে যায়,
নাবিক নায়ের বৈঠা টানে।।

শাখে শাখে পাখির তান,
পল্লিগীতি বাউলের গান,
সুর ভেসে যায় বাতাসে।।
বাংলা মায়ের সাথে প্রাণ,
জড়িয়ে থাকা পুষ্প ঘ্রাণ,
বাংলা মাতে পুষ্প সুবাসে।।

শাপলা ফোটা পুকুর ঘাটে,
হাঁসেরা জলে ডুবে ওঠে,
ডুবুরী ডুবে মাঝ পুকুরে।।
ধেনু চরায় রাখাল মাঠে,
নলখাগড়ার বংশী হাতে,
গান গেয়ে যায় দুপুরে।।

বৃক্ষ শীর্ষে জোনাকি বাতি,
জ্বলছে আলো সারা রাতি,
অন্ধ রাতে মায়ের শোভনে।।
উড়ছে কেহ বসছে ভ্রমর,
মধু চুরিতে ফুলের উপর,
খেলছে কেহ বৃন্ত দোলনে।।

Wednesday, 22 July 2015

নারীর মর্যাদা

নারীর মর্যাদা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

মাতৃ-গর্ভে নারীর আসন
বাবা বলে একি!
নারী বাবার হত্যা শিকার
মাতা করবে কি?
স্বাধীন দেশের স্বাধীন পুুরুষ
গর্ভে নারীর লাশ,
পরাধীন আজ নারী মানুষ
অকালে প্রাণ-নাশ!
গ্লানি ভূষণ দেখার প্রতীক্ষায়
সাজাও তেমন করে,
পথের মাঝে দোষ গেয়ে যাও
বারণ করনি ঘরে।
পশ্চাত্ ফিরে দেখবে যখন
নারীর কোথায় দোষ,
তোমার দীক্ষায় শিক্ষা নিয়ে
করে শুধু আপশোস।
কে কাহারে দোষ দিয়ে যায়
নারী সবার ঘরে,
অপর নারী দেখলে যখন
কটু দৃষ্টি করে।
নেশার ঘোরে থাক পুরুষ
রাস্তায় গড়া-গড়ি,
তোমার ঘরনী লজ্জায় মরে
তোমার বাড়া-বাড়ি।
সহ্য-শক্তির অধিকার নারী
পুরুষ হয় কাপুরুষ,
দিবা-রাত্রি নারী নির্যাতন
পুরুষ নেশায় বেহুঁশ।
গর্ভধারিণী মাতার সম্মান
দিও পুরুষ-গণে,
দোষের ছোপ দিওনা আর
নারীদের সম্মানে!

একটি পথের সাথী

একটি পথের সাথী

আব্দুল মান্নান মল্লিক   

তিন রাখালের গড়া সমাজ
তারাই জগত গুরু,
ছাগল ভেড়া চরিয়ে গেছে
কেউ চরিয়ে গরু।
একে একে আসলো তখন
সংকটের সেই মুখে,
সংকট বাঁধন করলো ছেদন
তাইতো আছি সুখে।
রহস্য জীবন ছিলো তাদের
মোদের ভাবনা ভেবে,
তিন রাখালের দীক্ষা নিয়ে
চলবো মিশে সবে।
উক্তির সমন্বয় ছিলো সবার
আমরা মানব জাতি,
মিলে-মিশে চলবো সবাই
একটি পথের সাথী।
মন্দির মসজিদ গির্জা মানি
তাদের নিয়ে সমাজ,
পুজো প্রার্থনা করছে কেহ
পড়ছে কেহ নামাজ।
পাশব বিহগ মানব সমাজ
ভাষাতে হয় ভিন্ন,
ধর্মের আসন গড়ছে সবাই
একটি রাস্তার জন্য।

Monday, 20 July 2015

খুকুমণির বিয়ে

খুকুমণির বিয়ে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

বিয়ের কনে সাজব মাগো
দিদির মতো করে,
ঘোমটা দিয়া পরাও শাড়ি
যাব বরের ঘরে।

চন্দন ফোটাই চমক দিব
কপাল আলো করে,
বর আসবে তখন আমার
পাল্কি গাড়িয় চড়ে।

মেহেদীর ছাপ দিও হাতে
আলতা দিও পায়ে,
গহনা দিয়ে ভরিয়ে দিও
আমার সারা গায়ে।

সিঁথির মাঝে দিও একটু
সিঁদুরে আঁকা দাগ,
কি-জানি কে দিয়েছিল
দিদির সিঁথেই ফাগ।

ঢোল বাজবে কাঁসর বাজবে
নাচবে ছেলে মেয়ে,
দিদির মতো বসবো পিঁড়েই
করবো আমি বিয়ে।

পাড়ার লোকে দেখবে এসে
বউ সাজব যখন,
স্বজন সবে আসবে আবার
দিবে গালে চুমন।

Wednesday, 15 July 2015

জীবন তীরে


স্বরচিত কবিতা

জীবন তীরে

সম্মুখে উদধি
উন্মাদ তরঙ্গ খেলা করে,
নেত্রকোণা ক্ষয়িত অশ্রুজলে।
কেন তবু সদা কুচানলে,
তপ্ত সিকতা কদমতলে।
কদাচিৎ আতশী সর্বাঙ্গ
প্লাবিত পূণর শিক্ত।
তবে কি, স্বয়ং দাঁড়িয়ে বিহ্বলে?
না, না!
অগম্য পশ্চাত্পদ পথ করেছি পরাস্ত বাহুবলে।
তবু কেন অদ্য স্পন্দিত হৃদয়, তম দ্বারে,
বন্ধ কর উন্মাদ, শান্ত হও এবারে।
দয়া করহে উন্মাদ উদধি যাইবারে আত্মালয়ে
কতশত কদম-চিহ্ন তোমার ওই পাষাণ বক্ষে।
তবু কেন বিরহে মুই, অপেক্ষায় তটে?
উন্মাদ লহরীতে ক্রন্দনের সুর মিশিয়ে দিয়ে!

Sunday, 12 July 2015

আমি টুকু ফেরিওয়ালা

আমি টুকু ফেরিওয়ালা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

আমি গ্রাম্য ফেরিওয়ালা,
বাড়ি ফিরি সাঁঝের বেলা।
সকাল সকাল সাজিয়ে ঝুড়ি,
গাঁয়ের রাস্তায় বেরিয়ে পড়ি।
হাঁক দিয়ে যায় গ্রাম্য পাড়ায়,
যে যা নিবে সব পাওয়া যায়।
আয়নার সাথে মুক্ত চিরুনি,
আরও আছে মাথার বিনুনি।
নিবে নাকি পায়ের আলতা,
চাইলে পাবে খোপার ফিতা।
হরেক রঙের নখের পালিশ,
যেমন চাইবে নাকের জিনিস।
কাঁচের চুড়িয় পালিশ মারা,
পাবেনা কিনতে আমি ছাড়া।
নকল করণে সোনার বালা,
খেলবে হাতে চমক খেলা।
বাচ্চারা একবার দাঁড়াও দূরে,
এনেছি খেলনা বোঝাই করে।
মা বোনেদের বিদায় করে,
দিব তোমাদের একটু পরে।
হরেক রকম জিনিস আছে,
মা বোনেরা এসো কাছে।
শাঁখের চুড়ি মেসিনে কাটা,
একটিও নাই ফুটো ফাটা।
হাতের বালায় ছবি আঁকা,
পায়ের নূপুর তিনটে ঝুমকা।
সিঁথির সিঁদুরটা নিতে পার,
ভীড় করোনা আছে আরও।
ছেমড়া ছেমড়ি বুড়ো বুড়ি,
তোমরা এসো তাড়াতাড়ি।
সাজানো আছে ঝুড়ির কানে,
আরও খেলনা ভিতর পানে।
বানানো মাটির ঘোড়ার গাড়ি,
বাচ্চারা যাবে মামার বাড়ি।
চাইলে তোমরা এটাও আছে,
উঠছে বানর তারের গাছে।
দেখাবো মটির রথের গাড়ি,
জগন্নাথ দেবের আকাশ পাড়ি।
বর কনে সব জোড়া জোড়া,
মটির পুতুল হাতের গড়া।
ফিরতে বাড়ি আঁধার নামে,
নিবে নাকি কেউ সস্তা দামে?

Saturday, 11 July 2015

ভ্রষ্টা

ভ্রষ্টা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

পাপ করেছি ভুল করেছি
বুঝিনি তো আগে,
কলঙ্ক ভার মাথায় ধরেছি
আছে যেটা ভাগ্যে।
যেমন খুশি দেখায় লোকে
আঙুল তুলে হায়,
মান ইজ্জত  হারাই শোকে
লজ্জার মাথা খাই।
বৃথায় জীবন গুনাহে মরি
তুইযে অলঙ্কার,
বদনাম সহে বাঁচতে পারি
তাইতো অহংকার।
দিব্যি দিয়ে বলছি তোরে
পাপিষ্ঠিরে যাস ভুলে,
পরিচয়-হীনে বাঁচিস সরে
দাবি নাই জাতকুলে।
জ্ঞানের নয়ন খুলবে যখন
ছাড়বো পরের ঘরে,
মায়ের কর্তব্য হইলে পূরণ
যাব অনেক দূরে।
নিজের হাতে হৃদয় ছেদন
কাউকে পারে দিতে?
ছাড়ছে মাতা মায়ার বন্ধন
দিচ্ছে অপর হাতে।
বুক ভেসে যায় অশ্রুজলে
হৃদয় মাঝে অনল,
স্বর্গ উদ্যানে ধরবো আঁচল
মুছাবো নয়ন জল।
দেখলে সবাই নামটা ধরে
গালি দিবে অনর্গল,
দিসরে আমায় ক্ষমা করে
রাখিস তবু মনোবল।
মাতৃ সূচনা গোপণ করিস
জিগায় যদি লোকে,
বলিস তাদের একটি কথা
দেখিনি মাকে চোখে।
তফাতে যত থাকবো আমি
করবো দোয়া তোরে,
মোর হৃদয়ের চাইতে দামি
তবুও রাখছি দূরে।

Thursday, 9 July 2015

বাংলার বর্ষা

বাংলার বর্ষা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

সারা রাত্রি বেজায় বৃষ্টি
দিনেও নাই বিরাম,
ব্যাঙেরা সব জমির আলে
ডাকছে অবিরাম।

সারিতে সব শিয়াল বসে
রেললাইনের ধারে,
বৃষ্টির জলে ভিজছে শীতে
হুক্কা - হুয়া করে।

খাল বিল সব বুঝাই হয়ে
জল উঠেছে ডাঙায়,
কই মাছ সব ছলাৎছলাৎ
ডাঙায় উঠে পালায়।

স্বল্পজলে হাঁসগুলো সব
করছে থৈ-থৈ,
জলে কাদায় মিশিয়ে দিয়ে
দেখতে যেমন দৈ।

জল জমেছে মাঠের উপর
কুহর ছাড়ে ইঁদুর,
ঢিবির উপর বসে তারা
কাঁপছে তুর-তুর।

খেয়া জালটি মারে জলে
ছিদাম ধরে রুই,
পিছনে তার ছোট ছেলে
হাতে ধরে খারোই।

ইচ্ছে হয় ভিজতে

ইচ্ছে হয় ভিজতে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ঝম ঝামাঝম বৃষ্টি পড়ে মাখব পথের কাদা,
বৃষ্টি জলে ভিজে যাব মানবনা কারও বাধা।
বাবা দেখলে বকাবকি মায়ের হাতে চড়,
দাদু কেমন ভাল মানুষ মা বাবা যেন পর।
ছেলেরা সব ছুটোছুটি ভিজে মাঝের পথে,
থাকবো কেন বন্ধ ঘরে ভিজবো ওদের সাথে।
বসে বসে দেখি শুধু ছেলেরা জলে খেলে,
কষ্ট নিয়ে ভাবছি বসে  আমি যেন জেলে।
রামুর গায়ে ছুড়ে কাদা মাখছে কেউ গায়ে,
মাকে দেখি রান্না ঘরে আমার দিকে চেয়ে।
ওদের ঘরের ছেলে আমি পারতাম যদি হতে,
বইপত্র  তুলে রাখতাম খেলতাম দিনে রাতে।
করেনা কেউ মানা ওদের ইচ্ছা যেটা করে,
মায়ে বাবাই বলে শুধু ভিজলে সর্দি ঝরে।

বিভ্রান্তি

বিভ্রান্তি

আব্দুল মান্নান মল্লিক

সূর্য ঘুরছে চন্দ্র ঘুরছে, ঘুরছে তারা গ্রহ,
বিশ্বটাও ঘুুরছে নাকি, বলতে পারে কেহ?
অবিরামে ঘুরছে সবাই, ঘুরছে সারা দেশ,
হবে কি আর এই জীবনে, সমাধানের শেষ?
ঘুরতে থাকে সুতো যখন, লাটিম যায় থেমে,
সুতো যখন থামে তখন, লাটিম পুরোদমে।
জ্যোতিষীরা ভাবছে বসে, সঙ্গে জ্ঞানী-গুনি,
শাস্ত্র কথা তুলছে যাজক, কার কথাটা শুনি।
মাস ঘুরছে ঋতু ঘুরছে, আসছে বছর ঘুরে,
সমুদ্র জল গগন ছুঁয়ে, আবার সমুদ্রে ফিরে।
চন্দ্র সূর্য ধরণী যখন, একটি সরল রেখায়,
চন্দ্র গ্রহণ দেখছি যখন, সূর্য থাকে কোথায়?
অন্ধ যারা ভাবছে তারা, দুনিয়াটা আঁধার,
মেনে নিতে কষ্ট কেন, দ্বিমত কেন আবার।
রোগ বৃদ্ধিই ঘুরছে মাথা, ঘুরছে ভাবি জগৎ,
চিরতরে মিটবে নাকি, থেকেই যাবে দ্বিমত।
ঘুরছি রোগে ভাবছি মিছে, ঘুরছে সর্বজনে,
একটি প্রশ্ন রেখে গেলাম, দ্বিধা কেন মনে?

Wednesday, 8 July 2015

পাথরের কান্না

পাথরের কান্না

আব্দুল মান্নান মল্লিক

বহির্গমন হইয়া অনড়, পদ রাখ লোনাজলে,
সর্বোচ্চে উঁচিয়ে শীর্ষ, রয়েছ আকাশতলে।
ভূগর্ভের দেওয়াল ভেঙে, উদিত ভূমি পরে,
কান্নার ধ্বনি শুনি, আজও তোমার অন্তরে।
চাপা পড়া অজস্র প্রাণ, হাজারে হাজারে,
চিৎকারের আওয়াজ সেথায়, যুগযুগান্তরে।
কান্নার চোখের জল, গড়িয়ে পড়ে ঝরনা,
সর্বাঙ্গ ভিজিয়া মিশে, লোনাজলে অধুনা।
সারা জগৎ ভেবেছিল, তোমার আগমনে,
পণ্ডিতেরা পাইনি খুজে, প্রাচীন বিবরণে।
নড়েচড়ে বসেছ এবার, সেদিনের সাড়ায়,
ভেঙে পড়বে শীর্ষ তোমার, হইবে অসহায়।
বার্তাবাহী অম্বুদ তখন, পাইবেনা অবকাশ,
বিমুখ হইবে চাইবেনা ফিরে, যখন সর্বনাশ।
তোমা হতে বড় কেহ, আসিবারে হেথায়,
সাজতে করেছে শুরু, কালের অপেক্ষায়।
আতঙ্কিত তুমিও সেদিন, কম্পনের ফলে,
ফিরিবারে উদ্যোগ পুনর, যাইতে ভূতলে।
দিয়ে যেতে হবে আজ, তোমারে জবাব,
নিরবে দেখাও কেন? ক্ষমতার অনু-ভাব?

Tuesday, 7 July 2015

চুপিচুপি


স্বরচিত কবিতা

চুপিচুপি

নুয়ে পড়া আমগাছ বাড়ির পিছনে,
অপেক্ষায় বসে আছি গোধূলি লগনে।
বলেছিলে কথা তুমি আসিতে যেথায়,
অপূর্ণ হয় ভালবাসা, আসিয়া হেথায়।
হয়তো আসিবে তুমি ঘরের বাতায়নে,
ধরে গরাদ ইশারাতে, বলিবে নয়নে।
হইতো বা বলবে তুমি, পাগলামি ছেলে,
অপেক্ষায় বসে তাই আমগাছের তলে।
বাতায়নের শিক ধরে, দেখিবে যখন,
আঁখিদ্বয়ের আলিঙ্গনে, স্বার্থক জীবন।
বারেক পড়ে কিঞ্চিত, আঁখিতে আঁখি,
বলতাম ইশারায় কথা, হবনা মুখোমুখি।
বাড়ির পিছনে লুকায় বসে নিরবধি,
পাছেতে আশঙ্কা করি, কেউ দেখে যদি।
একাকী ভাবি বসে সবার অবিজ্ঞাতে,
চাহিয়া থাকি কখনো দুইতলার ছাদে।
আমি লুকায় গাছতলে, মেঘাচ্ছন্নে রবি,
নিরাশে ফিরে আসি আঁধারে চুপিচুপি।

Saturday, 4 July 2015

পারিনি বুঝিতে

পারিনি বুঝিতে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

তুমি হঠাৎ ঘুম ভাঙাবে
আমি জানতামনা
ওহে! হস্ত পুত্তলি পেয়েছ কি মোরে?
ইচ্ছাতে গড়িয়া ভেঙেছ কতবারে।
হয়ে মমতাহীনা,
আমি জানতামনা।
পড়ে রবে একা! যদিও তুমি মহান,
ভেবেছ কখনো? নিষ্ঠুরতার বিধান!
তবুও বিড়ম্বনা?
আমি জানতামনা।
দিলে ঘুম যদি, ভেঙে দাও অচিরে,
ব্যাকুলতার হৃদয়ে স্বপ্নের আসর ঘিরে।
তবে বসতামনা!
আমি জানতামনা!
নিষ্ঠুর হে তুমি! করিনি দ্বিধা কোনো কাজে,
ছিলাম তো আরও ভাল, চৈতন্যের মাঝে
খেলাতে উন্মাদনা,
আমি জানতামনা!
অকারণে করিলে কেন ছিন্ন মায়ার বন্ধন?
উত্তর দাও আজ, এতসব কিসের কারণ?
কিছু বুঝতামনা,
আমি জানতামনা!
বুলিয়ে মাথায় হাত ঘুমপাড়ানি গানে,
দিয়ে ফুঁক চোখের পাতায় মায়ার টানে!
বুঝলে ঘুমাতামনা।
আমি জানতামনা!
চোখে দিয়ে ঘুম, করেছিলে অবসান চৈতন্য,
হয়েছ তুমি নিষ্ঠুর সেদিন, করেছি সেদিনও
তোমার সাধনা,
আমি জানতামনা।
ছেড়ে দাও তবে চাহিনা ফিরিতে তম কাছে,
মায়াহীনে কেমনে ছিলে, ছিলাম অগ্নিমাঝে!
করেছ বাহানা?
আমি জানতামনা!
কথা দাও! করিবেনা আর পরিক্ষা মোরে!
নিবেকি এবে আঁচলে ভরে, দিওনা ঘুমঘরে
না আর! অবমাননা,
আমি জানতামনা!
বুঝিতে পারিনি আজও তম এই খেলা,
বরফ কখনো তাপে আগুন হয় শীতলা।
তোমার ধারণা!
আমি জানতামনা!

Friday, 3 July 2015

স্বপ্ন সিদ্ধ

স্বপ্ন সিদ্ধ

আব্দুল মান্নান মল্লিক

অশ্বত্থ গাছের মাথার উপর,
ঐ যে সোনার রবি।
আজকে বুঝি স্বপ্নে হারা,
ফিরে পাওয়া ছবি।।
দিঘীর ধারে ভিজা মাটি,
বসতে ভিজে বসন।
পদ্মা পাতায় তৈরী করি,
বসার মতো আসন।।
দিঘীর জলে জলতরঙ্গে,
দোলন খেলে রবি।
ভাঙে আবার গড়ে কখন,
স্বপ্নের অনু-ভাবী।।
মাধবী বনে দিঘীর পাড়ে,
রং-বেরঙের পাখি।
অতি মনোহর প্রথম দিনের,
প্রাতকালের বৈশাখী।।
চিৎকার আর চেঁচামেচি,
পাখিদের কল্লোলে।
পাখিরা সব চান করে যায়,
পদ্মপাতার জলে।।
বক উড়ে যায় গগন পারে,
রবিকর তার গায়ে।
মন উদাসী তাকিয়ে থাকি,
আকাশ পানে চেয়ে।।
হারানো সেই স্বপ্ন আবার,
দেখছি নতুন ফিরে।
বাস্তব রূপে সপ্নের দেশটি,
সাজলো কেমন করে?

Thursday, 2 July 2015

সুখ সন্ধানী

সুখ সন্ধানী 

আব্দুল মান্নান মল্লিক 


গোটা দেশটা ঘুরছ কেন সুখের সন্ধানে, 

সুখ মিলবে আপন ঘরে ভাব যদি মনে। 

পান্তা ভাতের সাথে যদি লঙ্কা থাকে ঘরে, 

সুখী থাকতে দ্বিধা কেন সময় সীমা ধরে? 

দেখছ যারে সুখী ভাব সে-তো সুখী নয়, 

অচৈতন্যে রয়ে যেজন সেইতো সুখী হয়। 

যুগে যুগে মহামানব এসেছিলেন যারা, 

বিশ্বটারে সুখী করতে হেরে গেছেন তারা। 

ঢের সুখে আছ তবু কিসের এত আশ? 

বন্ধ ঘর পড়ে রবে আঙিনায় হবে বাস। 

হরেক রকম মানুষ আছে হরেক মতবাদী, 

তবেই ওঠে ভূবন গড়ে সাথে অন্তর্ভেদী। 

পেয়েছ কি বিশ্বজুড়ে সুখী মানুষ খুজে?

সকলেরই অন্তর জ্বলে বাইরে কজন বুঝে। 

সূর্য ওঠে দিনের বেলা রাতের বেলা চাঁদ, 

ধৈর্য বিনা পেয়েছে এরা সুখের আস্বাদ? 

অনুভূতিই সহানুভূতি তবেই গড়া জীবন, 

দুখ বিনা নাই অনুভূতি সুখের দপ্তর মরণ।

Wednesday, 1 July 2015

মস্ত পালোয়ান

মস্ত পালোয়ান

আব্দুল মান্নান মল্লিক

আমি এক মস্ত পালোয়ান,
এক নামেতে চেনা।
বলের কোনো নাই অনুমান,
শুনিনা কারও মানা।।
গাঁয়ের লোকে ডাকে মোরে,
পালোয়ান নাম ধরে।
কাছে আসতে ভয়ে মরে,
দাঁড়িয়ে থাকে দূরে।।
আরসোলাটি খুন করেছি,
যেদিন মাঝ পথে।
আসেনা কেউ কাছাকাছি,
দেখছে আড়ে ওতে।।
ছারপোকাটি ছুটে পালায়,
প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে।
আমায় দেখে রাস্তা হারায়,
হোঁচট খেয়ে পড়ে।।
পাঁচ লাঠিতে মাছি মারি,
সাত ঘুষিতে মশা।
একশ ওজনের তরবারি,
পিঁপড়া কাটা নেশা।।
বিড়াল তাড়াই দিনের বেলা,
নেঙটি ইঁদুর রাতে।
সাত চড়েতে ফড়িং কেল্লা,
জোনাকি মারি হাতে।।
বারো মাছি আঠারো মশা,
শত লোকের মাঝে।
কিল ঘুষিতে ঘায়েল দশা,
ভিড়েনা কেউ কাছে।।
থানার পুলিশ খুজে বেড়াই,
লুকায় ঘরের কোণে।
কি করিব কোথায় পালাই,
ভাবছি প্রতি-ক্ষণে।।
খুন খারাপির আসামি হয়,
ঘুম আসেনা রাতে।
দিনে রাতে পুলিশের ভয়,
ধরবে আচম্বিতে।।


বিভেদ মোচন

বিভেদ মোচন

আব্দুল মান্নান মল্লিক

মুছে দাও পূর্বধারণা,
গড়ে তোলো নতুন সমাজ।
একমত মোরা অধুনা,
এক শৃঙ্খলে বাঁধিবো আজ।।
ভুলে যাও ভেদাভেদ,
অধুনা আমরা সম সকলেই।
হবে জীবন অনির্বেদ,
পরিচয়ের সক্ষম মানুষ সেই।।
নামিয়ে দাও মাথা হতে,
ছিলো যত কুসংস্কার বোঝা।
মিল কর সয়ং মতামতে,
দুর্গম পথ হবে আরও সোজা।।
পায়ের ছাপ পথের পরে,
করিনা তবুও হাঁটিতে দ্বিধায়।
পদমিলন ভাবিও অন্তরে,
দুর্গমের পথ হবে সুগম সদাই।।
জাতি পাঁতি যাওগো ভুলে,
চলতে হবে আজ সবাই সমান।
হৃদয় দ্বার দাওগো খুলে,
বিগত গ্লানির করিতে অবসান।।
নীতিবাক্য সকলি সমান,
যত আছে বেদ কোরান পুরাণ।
তবু কেন ছিলাম অজ্ঞান,
কর তবে শীঘ্র পাপের সমাধান।।