Sunday, 31 January 2016

চেষ্টার পরিণাম

চেষ্টার পরিণাম

আব্দুল মান্নান মল্লিক

এসো আমরা কবিতা লিখি।
আমি বলি তুমি লিখো
তুমি বল আমি লিখি।
লাইনটা ঠিক হয়েছে কি?
না যদি হয় আর একবার দেখি।
তুমি লিখেছ? বাঃ, ভালোই হয়েছে।
ভুল লিখেছি আমি, দোষের কি আছে।
হতেই পারে ভুল চেষ্টা তো করেছি।
আবার লিখবো কি না ভাবছি।
হয় যদি হোক ভুল আবার,
তবু চেষ্টা করবো বারবার।
দোষের কি? লাইনতো সোজা করেছি,
এমন তো হয় প্রথম, যতটুকু শিখেছি।
তবুও ভালো হয়, হোক মন্থর গতি,
করে যায় চেষ্টা তবু দেখিবো ইতি।
বিফল হবেনা চেষ্টা এই বড় আশ,
চেষ্টার পরিণাম হয় জ্ঞানের বিকাশ।
আশীর্বাদ কর সবাই করোনা হতাশ,
আরও দাও উৎসাহ করি বিশ্বাস।



Saturday, 30 January 2016

খুশির দিন

খুশির দিন

আব্দুল মান্নান মল্লিক

চলনা একবার দেখে আসি,
চাঁদের গায়ে তারার হাসি।
আকাশ সেতো অনেক দূরে,
দীপ্তি জ্যোতি মায়ের ঘরে।
শোভন বদন নূরের আলোয়,
নতুন জাতক শিশুর উদয়।
এসেছে জগৎ আলো করে,
পয়দা নিয়ে দুখিনীর ঘরে।
মায়ের আঁচল শোভা পেলো,
হার মেনেছে চাঁদের আলো।
দেখতে আসে দফাই দফাই,
জ্ঞান বিজ্ঞানী তান্ত্রিক সবাই।
সারিতে পশু সারিতে পাখি,
দেখতে সবাই মারছে উঁকি।

Friday, 29 January 2016

এইতো জীবন

এইতো জীবন

আব্দুল মান্নান মল্লিক

কোনটা জীবন কোনটা মরণ,
কর রে মন সরণ।
যখন যেথায় থাকো রে মন,
হয়না আত্মার মরণ।।
ঘুমের ঘোরে আঁতকে ওঠো,
ভাবছ মিথ্যা স্বপন।
সহানুভূতি আর অনুভূতি,
সেই ঘরেও সর্বক্ষণ।।
বিচরণ কর যখন যেথায়,
সম্বল শুধু বাতাস।
শূন্য হৃদয় পূরণ করে,
শ্বাস আর প্রশ্বাস।।
মনের দরজায় তালাচাবি,
উঠোনে কর বাস।
খোলা জানালায় আসে যায়,
অহরহ বাতাস।।
ভাবো রে মন ধ্যানমগ্নে,
ঘুচবে অন্ধকার।
ভেবে ভেবে সবই ফাঁকা,
এইতো জীবন সার।।

Thursday, 28 January 2016

বাতাসের বার্তা

বাতাসের বার্তা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

আকাশ তলে শোক আলেয়া,
ধুলির কণায় উড়ছে ধোঁয়া।
ধুলির ভুবন ধূসর রঙে,
শরম ছাওয়া সারা অঙ্গে।
শুকনো পাতার নূপুরধ্বনি,
ঐ বাজছে রিনিঝিনি।
ধূসর ধুলোয় দিচ্ছে ইঙ্গিত,
গাইছে ভ্রমর শোক সঙ্গীত।
নব বার্তায় ঐ যে বাতাস,
মিলবে বুঝি শুভ আশ্বাস।
বাতাস বলে শুনছো  নাকি?
বসন্তের ঐ উঁকিঝুঁকি।
কান পেতে শুনো ঐ
পাখিদের হৈ-চৈ।
শাখে শাখে গুটি গুটি,
বিহগেরা দুটি দুটি।
সুর তুলেছে গানে গানে,
প্রেমালাপ আর আলিঙ্গনে।
বলছে কথা বাতাস আরো,
রবেনা দুঃখ এবার কারো।
দেখো কত ঝুলে আছে,
পুষ্পকুঁড়ি গাছে গাছে।
করবে বরণ সেই অপেক্ষায়,
পুষ্পকুঁড়ি শাখায় শাখায়।
নব পল্লব আসবে ফিরে,
বৃক্ষশাখা সবুজ করে।
সবুজ রঙে সাজবে শাখা,
বসবে পাখি মেলবে পাখা।
গাইবে ভ্রমর গুনগুনিয়ে,
উড়বে ফুলের মধু খেয়ে।
আকাশতলে নাচানাচি,
ঐ দেখা যায় কাছাকাছি।
ভুবন কোলে জ্বলবে আলো,
ঘুচবে ধরার আধার কালো।
যাচ্ছে বয়ে সময় যত,
আসছে এবার ঐ বসন্ত।


Friday, 22 January 2016

রাতের কুহেলিকা

রাতের কুহেলিকা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

আড্ডার আসর ভাঙলো সবে
রাত বারোটার পরে,
কুহেলিকায় ভিড় করেছে
চারিপাশ ঘিরে।
বড় বড় দালান হারায়
ভাবছি রাস্তা ফাঁকা।
এদিক ওদিক যেদিক তাকাই
যায়না কিছু দেখা।
স্তম্ভবাতি মিটিমিটি
জ্বলছে সারারাতি।
ছাদে বুঝি জ্বলছে কারও
জোনাকি বিদ্যুৎ বাতি।
কেঁচর কেঁচর পেঁচক ডাকে
লুকিয়ে গাছের ডালে।
বন্দিশালার কয়েদি আমি
কুহেলিকার জালে।
কালো কালো ঝুপি ঝুপি
দাঁড়িয়ে বুঝি গাছ।
চেনা রাস্তা যাযনা চেনা
রাস্তায় কাটে রাত।



Sunday, 17 January 2016

এসো হে বসন্ত

এসো হে বসন্ত

আব্দুল মান্নান মল্লিক

এসো এসো এসো ,
এসো হে বসন্ত।।
বাংলার চত্বরে উড়াও পুষ্পনিশান,
রক্তিম হয়ে উঠুক সুরভিত বাগান।
বাংলা উদ্বেগ আসার অপেক্ষায়,
খুলে দাও এবার নতুন অধ্যায়।
এসো এসো এসো,
এসো হে বসন্ত।।
ঝরিয়ে দিয়ে বৃক্ষের শুকনো পাতা,
নবপত্র পুষ্পে আসুক বাংলার নিষ্ঠা।
বাতাসে বেজে উঠুক পাখিদের গান,
পুষ্পে-পুষ্পে ভ্রমর করুক মধু-পান।
এসো এসো এসো ,
এসো হে বসন্ত।।
ধ্বনিত কর বাতাস কোকিলের কুহু,
গেয়েছিলাম সাথে গান শৈশবে হুবহু।
ফিরে আসুক বাংলা পুনর সম্মানে,
ভেসে উঠুক সুর কোকিলের গানে।
এসো এসো এসো ,
এসো হে বসন্ত।।
আসুক বৃক্ষের কোটরে বসন্ত বৌরা,
রক্তবর্ণ হয়ে উঠুক শাখা কৃষ্ণচূড়া।
মৌগন্ধে বাতাস মতাল অম্রকাননে,
কম্পনের সুর বাজুক ভ্রমর গুঞ্জনে।
এসো এসো এসো ,
এসো হে বসন্ত।।
উত্কণ্ঠিত বাংলাকে কর বিকশিত,
আলিঙ্গনের বন্ধন হক চির অনন্ত।
এসো এসো এসো,
এসো হে বসন্ত।।

Friday, 15 January 2016

স্বেচ্ছাচারী

স্বেচ্ছাচারী

আব্দুল মান্নান মল্লিক

তুমি সেই পথেরই পথিক,
যে পথের পথচারী পথিক সঙ্গীহীন। 
তুমি সেই প্রেমিকার প্রেমিক,
যে প্রেমে প্রেমিকা কাঁদে চিরদিন।।
ভালোবেসে ধরা দাও হৃদয় প্রাঙ্গণে,
তবে কেন বাঁধো বাসা নদীর ভাঙনে।
তুমি সেই আকাশের পাখী,
যে আকাশ ভেঙে পড়ে অচিরে।
তুমি সেই বিশ্বাসের সাথী, 
যে বিশ্বাস বিলীনে যায় বহুদূরে।।
শত চেষ্টা করিলেও ফিরিবেনা আর,
তবে কেন স্বেচ্ছাচারী শুন্যে উড়িবার। 
তুমি সেই গাঙের নাবিক,
যে গাঙ শুষ্ক জ্বলন্ত দাবানলে।
তুমি সেই নাবিক নির্ভীক,
যে নাবিক গাঙের শুষ্কতলে।।
পল্কা কাষ্ঠ নৌকাখানি যাইবে বিফলে,
তবে কেন বৈঠা হাতে জাল নদীতলে।


Wednesday, 13 January 2016

√ অবদান

অবদান

আব্দুল মান্নান মল্লিক

চাষি ছুতোর কামার বন্ধু
নাপিত কাটে লোম,
সবার চেয়ে কাছের বন্ধু
মুচি মেথর ডোম।
তাইতো সবাই চলছি যেন
বড়লাটের বেটা,
গৌরব করি তাদের নিয়ে
গর্বিত এই দেশটা।
নোংরা সেজে থাকতো সবাই
না থাকতো এরা,
তাকিয়ে দেখতাম জগৎটারে
আবর্জনায় ঘেরা।
যাদের নিয়ে গৌরব মোদের
দিইনি কিছু তাদের,
জ্ঞান বিকাশে বিজ্ঞান উদ্ভব
হয়নি ছাড়া তাদের।
কারিগর ঘুমায় গাছতলাতে
দিয়ে মোদের ছাদ,
মেটে তেলে জ্বালিয়ে বাতি
কাটায় সারা রাত।
আকাশ পথে ঘুরছে মানুষ
কখনো চাঁদের দেশ,
তাদের ভাবনা মাথায় রেখে
আজকের পরিবেশ।
দিয়েছে তারা অনেককিছু
করেছে স্বীকার মরন,
তাদের অবদান হৃদয় মাঝে,
রাখবো সারা জীবন।

পথপ্রান্তে

পথপ্রান্তে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

হৃদয়ে লুকানো যত ছিল কাব্যগাথা,
ব্যক্ত করি কিছু তার মনের ব্যাকুলতা। 
ভূতলে শুয়ে কে ঐ, কে ঐ অগ্নিদাহি?
ভেসে যায় জলস্রোতে কে ঐ সন্ধানি!
এসেছিল ওরা সবে এক পথের পথিক, 
তবে কেন ভিন্ন পথ যেতে একাধিক।
মরাখেকো কুকুরেরা ভুখে টেনে তুলে,
অবশিষ্ট পড়ে অস্থি স্রোত নদীর কূলে। 
শিয়ালেরা বল খেলে রাতের অন্ধকারে,
ছুঁচো ইঁদুর বাসা বাঁধে মস্তক কোটরে।
সমন্বয়ের ভক্ত সেদিন আজ শুন্য হাতে,
খেলাঘর ভেঙে যায় পথের শেষপ্রান্তে।
বজ্র মুষ্টিয় ছিল জ্ঞাতি মমতা জড়িয়ে,
সরে যায় জ্ঞাতি জন বাঁধন মুক্ত হয়ে।
বিফল হল ভাবনা যত পথের অবশেষে,
ফুরিয়ে গেল সময় যত এই শুভ্রকেশে।

Tuesday, 12 January 2016

প্রেম শেখো

জেনেশুনে ভালোবাসো
                                   
আব্দুল মান্নান মল্লিক
                                     
হাতে হাত রেখেছিলে।
দিয়েছিলে বচন
তোমার আমার ভালোবাসা
রবে চিরন্তন।।
মনে পড়ে তোমাকে আজ
বৃক্ষ ছায়াতলে।
বসেছিলাম পাতিয়া তোমার
শাড়ির আঁচলে।।
হরিয়াল হরিয়ালী নামে
সবুজপত্র শাখে।
বন্ধ করে গীত সংগীত
আমাদের দেখে।।
দুটি পাখি হেসেছিল
বলেছিল কথা।
আমরা যেন করেছি নষ্ট
ওদের স্বাধীনতা।।
প্রেমিক প্রেমিকা ওরা
ছিল মাথার উপর।
অসহনে দেখে মোদের
অস্থিরতায় কাতর।।
নাগর নাগরী যেমন
ওরা দুইজন।
ফিসফিস বুলি তাদের
মধুর বচন।।
প্রেম কদর রসাস্বাদন
বুঝে পক্ষধর।
নরনারী প্রেমে পাগল
বন্ধ দিয়ে দোর।।
প্রেমের কথা বলে মানুষ
অভিনয়ের ছল।
তাইতো তুমি অপর ঘরে
মুখে মিথ্যা বল।।

Monday, 4 January 2016

চলন

চলন

আব্দুল মান্নান মল্লিক

সোনার এক পাথরবাটিয় খাচ্ছে দাদু দৈ।
কাঁঠাল রসের আমসত্ত্ব তাই কখনো হয়?
মজার কথা বলতে লজ্জা এমন যদি হয়,
মেয়ে মানুষ খাটছে মাঠে পুরুষ ঘরে রয়।
শুনবে নাকি মজার কথা কল্পগুরুর দান,
অন্ধ মানুষ সিনেমা দেখে বধির শুনে গান।
তেমাথা এক পথের ধারে মজার অনুষ্ঠান,
পক্ষাঘাতে বাজায় ঢোল বোবায় করে গান।
বড়লোকদের কুকুরগুলো ট্যাক্সিয় ঘুরে শহর,
দীন প্রবীণ লাঠিয় হাঁটে পাইনা শীতের চাদর।
হাসপাতালে ঢুকতে মানা মানুষ যদি হয়,
বিড়াল ইঁদুর হুকুম ছাড়া রুগির খাটে শোয়।
মদের নেশায় ঘুরতে দেখে ঘুরছে চন্দ্র তারা,
তত্ত্বজ্ঞানে বলছে ওরা ঘুরছে সারা ধরা।
মদের কথা উঠলো যখন শরম কেন আর?
প্রাণনাশ হয় নেশার ঘোরে সংসার ছারখার।
নেশাখোরদের তাড়াই পুলিশ আজব দুনিয়া,
অনুমোদিত মদের দোকান আইন অক্রিয়া।
ঘোষের দুধ বাড়ি বাড়ি খায়না এমন মানুষ,
মদের নেশায় গড়াগড়ি রাস্তায় পড়ে বেহুঁশ।


Sunday, 3 January 2016

মায়ের স্মৃতি

মায়ের স্মৃতি

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ডেকেছিলাম কতবার,
চিৎকারেও দাওনি সাড়া।
আর্তনাদে কেঁদেছিলাম,
বক্ষ বহিয়া অশ্রুধারা!
আমার কান্নায় মাগো,
কেঁদেছিল গোটা পাড়া।
পাথর গলেছে কান্নায়
মাগো তুমি ছাড়া!
তোমাকে ভাবিতে ভাবিতে
ঘুম আসেনা রাতে বিছানায়।
ভিড় করে চারিপাশে,
স্মৃতিগুলো বড় অসহায়।
কত আদর করেছিলে
জড়িয়ে বক্ষে তুলে।
তবু কেন দূরে আজ,
আমারে গেছো ভুলে!
কখনো রাখনি মাটিতে মাগো,
পিপিলিকাতে ছিল ভয়।
মাথায় রাখিলে রোদ্রতাপ,
রেখেছিলে হাতের মুঠোয়।
আমি ভালো জানি মাগো,
চিনি ভালো তোমারে।
হয়তো পারনি আসিতে,
নিয়তির বাঁধন ছিন্ন করে।
তাকিয়ে দেখি রাতের আকাশ,
দেখা দিবে বিশ্বাসে।
কেঁদে কেঁদে ঘুমিয়ে পড়ি,
ক্লান্তির অবশেষে।
কত সুখে আছ বুঝি,
অজানা কোনো দেশে।
একটুখানি রেখো জায়গা,
মাগো তোমার পাশে!

Friday, 1 January 2016

স্বপ্নের সাক্ষাতে

স্বপ্নের সাক্ষাতে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

অঘোর স্বপ্নঘোরে আমি নদীর বাকেঁ,
ঢালুপাড়ে কাশবনে শিয়ালেরা ডাকে।
শিয়ালের ডাক আর নদীর কলধ্বনি,
গা ছমছম করে কেমন নিভৃত রজনী।
ভেসে আসে কানে ঐ নিক্কনের ধ্বনি,
চেনা ধ্বনি সেদিনের আজ পুনর শুনি।
কুহেলিকা চন্দ্রপ্রভায় অস্পষ্টে দেখি,
আবছায় দাঁড়িয়ে এক ছায়া মুখোমুখি।
আকস্মাৎ চমকে দেখি হারানো বনিতা,
অশ্রুজলে চেয়ে দেখে আমার ক্লেশতা।
কণ্ঠস্বর হারিয়ে আমি স্তম্ভিত নিরন্তর,
চার নয়ন এক পথ তবু বাধা চিরতর।
ভাবনার অতীত তবু দেখিয়া সম্মুখে,
চেয়েছিনু বলিবারে আসেনি কথা মুখে।
নির্মমে ডানা মেলে মিলিয়ে আকাশে,
হঠাৎ আঁতকে জাগি বনিতা নাই পাশে।
হয়েছিল কিঞ্চিৎ দেখা তবু হয়নি কথা,
আজও আমি বয়ে চলি বুকভরা ব্যথা।
দুজনের আঁখিজল একটা মোহনায়,
তবু মোরা দুইজনে বিভেদ জায়গায়।
নিয়তির খেলাঘর সীমাহীন জীবন,
অকালেই ভেঙে পড়ে যখন তখন।