Sunday, 29 November 2015

সুপ্রভাত বাংলা খবর

সুপ্রভাত বাংলা খবর

আব্দুল মান্নান মল্লিক

খবরের প্রারম্ভে লেখনী সুপ্রভাত,
পড়ে দেখি খবরে সবটা দুঃসংবাদ।
অহরহ চলে কত শিশু নারী পাচার,
খবরে কেন মিথ্যা সুপ্রভাত উদার?
অবলার মান হারায় দিনের বেলা,
খবরে হয় প্রকাশ নারীদেহ খেলা।
নির্দোষী সাজা পায় প্রমাণ অভাবে,
অবাধে দোষীরা ঘুরে দলবদ্ধভাবে।
সমাচারে হয় প্রকাশ নীরিহ নিগ্রহী,
প্রতিবাদে হয়ে অক্ষম সদা প্রদাহী।
টেলিভিশন খুলিতেই খবর উপম,
সুপ্রভাত দিয়ে বলে বাজার গরম।
বোমের নিস্বন আর কোথাও খুন,
ওদের রাজত্ব যেন জ্বলন্ত আগুন।

Wednesday, 25 November 2015

অভিমানী পৃথিবী

অভিমানী পৃথিবী

আব্দুল মান্নান মল্লিক

না থাকতে তোমরা যদি হেথা পৃথিবীতে,
অভিমান করি তাই আসে কি যায় তাতে?
একা একা ছিলাম ভালো তবু শতগুণে!
রক্তাক্ত করেছ বক্ষ আসিয়া জনে-জনে।
সহ্য ধৈর্য সহিষ্ণুতায় ধরেছি বক্ষ মাঝে,
সহে যায় নির্যাতন তোমাদের অবুঝে।
তোমাদের খুশী করতে হয়েছি কদাকার, 
সমীপে মাতৃ বন্দনা পশ্চাতে অনাচার। 
যতকিছু আছে মোর করি সবারে বন্টন, 
সুযোগে করেছ কলুষিত আমার অঙ্গন। 
ভেবেছিলে পৃথিবীতে আছে প্রয়োজন ? 
ভুল ভেবে ঠাঁই বসে তুমি গুণীজন।
ঘাতে ঘাতে পদপৃষ্ঠে জর্জরিত খননে,
অবজ্ঞা করেছ সদা কারণে অকারণে!
খুনোখুনি রাহাজানি ভাই ভায়ের সাথে,
ভিজে যায় দেহ মোর তোমাদের রক্তে।
মহামানব গুণীজন আছ তোমরা যত,
দেখিতে পাওনা সবে ক্ষতবিক্ষত কতো।
হেলিত সতত তবু নিয়ে মাতৃত্বের ভার,
এর বেশী দিতে পারি বল কতো আর? 

Monday, 23 November 2015

শয়তানের দুষ্টুমি

শয়তানের দুষ্টুমি

আব্দুল মান্নান মল্লিক

কঙ্কাল সার দেহের গোড়ন
কুবুদ্ধি আর দুষ্টুমিতে চতুর,
তল্লাস করে ঘুরছে শয়তান
কোথায় পাবে কারো কসুর।
ঘুমিয়ে আছে দেখলে মানুষ
পালাই দিয়ে কান সুড়সুড়,
মজা দেখতে দাঁড়াই দূরে
চমকে মানুষ উঠছে ধুড়মুড়।
দিনে রাতে মানুষের পিছে
ঘুরছে শয়তান ঘুর-ঘুর,
মজা দেখতে লাগিয়ে দিলো
দেওয়াল সেঁটে আঁখের গুড়।
মিঠাই মিঠাই গন্ধে মাতাল
ঘরের কোণের ধেড়ে ইঁদুর,
টিকটিকি আর পিঁপড়া মাছি
সারিতে সবাই আসছে প্রচুর।
ইঁদুর ধরতে ছুটছে বিড়াল
সাঁঝের বেলা গড়িয়ে দুপুর,
তাইনা দেখে রাম কানায়ের
বিড়াল তাড়াই কালো কুকুর।
চালের মাথায় বসে শয়তান
দেখছে খাচ্ছে অস্থি কুড়মুড়,
মাঝে মাঝে খিলখিল হাসে
অস্থি খেয়ে তুলছে ঢেকুর।
গিন্নিরে ডাকি চিৎকার করি
দাওতো হাতে কাঠের মুগুর,
মুগুর ছুড়তে পালায় কুকুর
হাঁড়ি-কুঁড়ি পড়লো হুড়মুড়।



Friday, 20 November 2015

অভিমানী

অভিমানী

আব্দুল মান্নান মল্লিক

প্রেমের কথা ভাবিনা কখনো
তোমাকে নিয়ে আর,
সুখ নিমেষে এসেছিলে পাশে
নির্দয় বন্ধু আমার।
ফুরাবে যেদিন কুসীদ তোমার
পালাবে ভিন-দেশে,
ছায়া বৃষ্টিতে মেঘেদের সাথে
খেলবো অবশেষে।
দেরি নাই আর আসবে পূনর
হরিৎ পত্র শাখায়,
বলবোনা কথা শুনবোনা গান
সেই মিষ্টি গলায়।
বসতি কোথায় নাই ঠিকানা
সবার জানাজানি,
সাথের পাখী দেখছে তোমায়
করছে কানাকানি।
তাইনা ভেবে চাইনা তোমায়
কেমনে ভালোবাসি,
মধুর কন্ঠে ভুলাও যতোই
তুমি বসন্ত পিয়াসি।
আবার তেমন আসবে যখন
সেই বসন্তের সাথে,
মধুর গলায় ডেকোনা কুহু
ঘুম ভাঙবে রাতে।
রাগের কথা হক বা না হক
অভিমান তো আছে,
তাইতো তোমার মধুর সুর
বাজে হৃদয় মাঝে।


Thursday, 19 November 2015

কি হবে বিশুদ্ধ জল

কি হবে বিশুদ্ধ জল

আব্দুল মান্নান মল্লিক

অপরের দোষ গেয়ে হাটে ভাঙো হাঁড়ি,
নিজেদের দোষ ঢাকতে রঙের রকমারি।
রাজপথে গাও যদি দোষ দিয়ে সবার,
নিজের কেমন সদ্গুণ দেখাও একবার।
আতর সুবাস দিয়ে আছে দুর্গন্ধ ঢাকা,
শুভ্র পরিধানে দেহ অন্তরে কালি মাখা।
গুরুর আসন দিয়ে চরণ তলে যারা,
তোমাদের কাছে আজ ঘৃণিত তারা।
নিরীহ মানুষ গুলো করে তাই বিশ্বাস,
সুযোগে মেরেছ তাদের করে রুদ্ধশ্বাস।
দেখাতে ক্ষমতা তুমি পেয়ে অক্ষমতায়,
দুর্বলের যায় প্রাণ তোমাদের দক্ষতায়।
ছুটে যায় দুর্বলেরা প্রাণ বাঁচাতে কাছে,
শীর্ষে ধরেছে যারা জুতের আগে-পিছে।
দেখিয়েছ পথ যেমন হাঁটে সেই পথে,
দিনেরাতে অবিচার কর তাদের সাথে।
ছোটলোকের মান যাক নাই আপসোস,
পদতলে দেখো ওদের ভাবো কর্মদোষ।

Wednesday, 11 November 2015

সর্ব ধারক তুমি

সর্ব ধারক তুমি

আব্দুল মান্নান মল্লিক

আমোন বোরো কখনো মৌসুম চৈতী,
বারেক হায়নে ধরাগর্ভে ত্রয়রতি।
ছয় ঋতু বারো রতি অধুনা নারী,
ত্রয়রতিয় সর্বজনম গর্ভে তোমারি।
তোমার জঠর মাগো স্বর্গভুমি,
সর্ববস্তু ধারণি বক্ষে মহামাতৃ তুমি।
ঔজ্জল্ল কর জীবন তোমার ছোঁয়ায়,
জীবন সীমান্তে দিও শীতলতার ঠাই।
অগণিত জীব সবই তোমারি সন্তান,
সর্ববস্তু ধরেছ বক্ষে দিয়েছ স্থান।
জীব যতো আহার ততো, তোমারি দান,
চোষ্য, চর্বণে কেউ, করে কেউ পান।
সর্ব আত্মা অচৈতন্যে, কেউবা চৈতন্যে,
অক্ষমে মিশেছে সাথে কেউ সঞ্চালনে।
হানাহানি রাহাজানি বক্ষে তোমার,
তবু হওনা ধৈর্যহারা করে অঙ্গিকার।
মমতাময়ী সহ্য সহনী যুগযুগান্তরে,
শীর্ষে ধরেছ মোদের রয়েছ কাতরে।
খুলে দাও যদি একবার রুদ্ধের দ্বার,
অগ্নিকাণ্ড জলস্রোতে হবে একাকার।
পরিণামের কথা আজ নাই কারো জানা,
হয়তো থাকবেনা সঙ্কেত শূণ্য প্রতারণা।
অসীম ক্ষমতা মাগো তোমার করুণায়,
প্রহরিণী রয়েছ তুমি আমরা নিদ্রায়।
প্রাণবন্তেও তুমি বিলীনের সাথে তুমি,
কৃতজ্ঞ তোমার কাছে হে গর্ভভূমি।

Friday, 6 November 2015

রূপশ্রী নির্বসিত্তা

রূপশ্রী নির্বসিত্তা 

আব্দুল মান্নান মল্লিক

রোদ দুপুরে পথপ্রান্তে ছলছল চোখে, 
ভূষণে বিধবা এক বিস্বাদ হাসি মুখে! 
আবৃতে শুভ্র শাড়ি কেশবীথি ফাঁকা,
অকালে খুইয়ে পতি ত্যক্ত হস্তশাঁখা।
দিন অনাহারী কে ও-ই নারী হীনতায়,
পথ চলতে ক্ষণে শান্তে প্রাকার সহায়।
প্রশ্নঘাতে জর্জরিত মন্থরে কাছে যায়, 
ক্ষণে ক্ষণে ভাসে মুখ আবার হারায়। 
চেনা কোনো নারী বুঝি বড় অসহায়, 
কে-গো তুমি ক্লিষ্ট নারী দ্বিধায় শুধাই।
নাম ধরে ডাকে মোরে তুমি সেই জন?
নির্বাক থ' মুই জড়তায় হারায় বচন! 
মাথা ঝিম ঝিম গা হিম কষ্টে ঠাহরি, 
পতি হারা গৃহছাড়া চেনা মুখ রূপশ্রী।
লুকানো কি যায় কভু নিভৃতের ব্যথা,
অশ্রুসজল নেত্র তার বলে আত্মকথা!
পতি বিনা পতিগৃহে তিক্তের স্বাদে,
রূপশ্রী নির্বসিত্তা অপয়া অপবাদে।
জমানো ব্যথা বুকে নিভৃতে অস্পষ্টে,
অস্ফুটে নেত্রকোণে অপেক্ষায় কষ্টে।
হিংসুটে শাশুড়ি যার পতিগৃহে বাস,
পতি বিনা নারী জীবন হয় সর্বনাশ।
নিপীড়নে ফিরে রূপশ্রী শৈশব গৃহে,
কটুকথা বলে লোকে নির্বাকে সহে।

Sunday, 1 November 2015

সত্যের সন্ধানে

সত্যের সন্ধানে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

কেউ জানেনা নিজের কথা,
জীবন পথের শেষ অস্তিত্ব,
গোলক ধাঁধার এই দুনিয়ায়,
কোনটা মিথ্যা কোনটা সত্য।
বলতে পার আছো কি নাই,
স্পর্শ কাতরতার অনুভূতি।
এক পথেরই পথিক মোরা,
আছে কি কারো সহানুভূতি?
ভাবছো যেটা দেখছো ভিন্ন,
হারিয়ে দিয়ে নিজের মনটা,
গোলক ধাঁধায় পড়ে এবার,
দেখছে সবাই সবটা উলটা।
স্বপ্ন সত্য না বাস্তব জীবন,
পারবে দিতে সঠিক প্রমাণ?
ধাঁধায় ধাঁধায় বৃথাই জীবন,
মিথ্যা ভাবো আকাশ সমান।