Tuesday, 29 September 2015

সেকেলে

সেকেলে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

তরে তরে রূপান্তরে যতকিছু আজ,
সেদিনের রাজশাসন আজ উপরাজ।
লাউ-খোলে তার বেঁধে দিয়েছিল সুর,
বাতাসে ভাসে আজও সুরের অঙ্কুর।
পথের ধারে বসে কারো  বারান্দায়,
প্রবীনের কেচ্ছা শুনা শৈশব-বেলায়।
রাখাল ছেলে যদি মাঠান গান গাইত,
সাগরের কোল ছাড়ি জলপরি নাচত।
খুজে পেতাম যদি হারানো সুরের বাঁশি,
ফুল পরি নাচত আবার ঐহিকে আসি।
মেঠো পথ ধরে গেয়েছিল পথিক গান,
সেই কন্ঠসুরের আজ নাই সেই তান।
দেখেছি এই পথ দিয়ে গরুর গাড়িতে,
শ্বশুর বাড়ি যেতে বউ নতুন শাড়িতে।
সেইদিন আর এইদিন বহুদূরের পথ,
দ্বিষত্ পূর্ণতে মানুষ অধুনা হয় দ্বিমত।

Thursday, 24 September 2015

নীল আকাশের দেশে

নীল আকাশের দেশে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

রবনা মা কোলে তোমার, নইতো ছোট আর,
যেথাই খুশী যাব সেথায়, বড় হয়েছি এবার
ইচ্ছা করে হারিয়ে যেতে, নীল আকাশের দেশে,
চাঁদের আলোয় খেলব আমি, তারার সাথে মিশে।
খেলব আমি ছুটোছুটি, ওই তারাদের সাথে,
আলো ছড়ানো চাঁদের সাথে, বলব কথা রাতে।
তোমার সাথে খেলবো আমি, লুকোচুরি খেলা,
মিটিমিটি দেখব আমি, খুজবে রাতের বেলা।
ডেকে ডেকে বলব মাগো, হেথায় আছি আমি।
দুহাত বাড়িয়ে ডাকবে তখন, এসো সোনা মণি।
বলব তখন তোমায় আমি, আসব কাছে তবে,
ওদের সাথে খেলার শেষে, যখন সকাল হবে।
মিস্টি হাসি দিচ্ছে দেখো, আমার দিকে চেয়ে।
কেমন করে বুঝলো ওরা, আমি ছোট্টো মেয়ে?

Monday, 21 September 2015

নিষ্প্রাণ কবিতা

নিষ্প্রাণ কবিতা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

রাতের কালে নিরত থাকি,
কলম নিয়ে হাতে।
লিখতে থাকি কবিতা আমি,
পারিনা প্রাণ দিতে।

কবিতা মোর জীবন সাথী,
কবিতা মোর প্রাণ।
আবৃত্তিকার এসো একবার,
গাও কবিতার গান।

বাঁচবে তবে প্রাণ কবিতার,
বলবে কথা তবেই।
তোমার সুরে কইবে কথা,
কবিতার জয় হবেই।

পাঠক করলে কবিতা পাঠ,
তবেই লিখা সফল।
নইলে কবিতা অজ্ঞান রবে,
লিখাই হবে বিফল।

খেলার পুতুল গড়ি হাতে,
বলেনা কেন কথা।
নির্জীব হয়ে রইলো পড়ে,
খাটুনি সাধন বৃথা।


Sunday, 20 September 2015

তোরে করিনা বিশ্বাস

তোরে করিনা বিশ্বাস

আব্দুল মান্নান মল্লিক

যা, যা যা-না, খোলা আকাশ মুক্ত বাতাস,
করেছি কি, তোরে একবারও মানা?
নীল আকাশে মেঘেদের সাথে যা-না!
তবুও করিবনা মানা!
নাইবা হোক আমার তারে বাঁধা লোহার খাঁচা,
পারিনা হইতো শীতল বাতাসে রাখিতে, এইতো অভিমান? যা-না! করেছি কি মানা?
নাইকো আমার ভরা পুস্করিনি, অথৈ জলের সাগর। আছে শুধু মোর, খাঁচার এক কোণে বিরাজে ছোট্ট জলাভুমি, তবুও পাইনি খুজে তল। যদি না হয় শ্রানের জল, যা-না! করেছি কি মানা? যেথায় অথৈ জল।
সদা ভাবিস মনে, ফন্দি আঁটিস সংগোপনে,
বিরাজে বসিয়া অছিলার সন্ধানে।
কে করিবে বিশ্বাস তোরে? না আমিও। করে বিশ্বাস তোরে, কোথায় হারিয়েছে তারা।
ভষ্মিভূত করেছিস তারে। কাউকে তলিয়ে
ভূতলে, কাউকে ভাসিয়ে গঙ্গা-জলে।
চলে গেছিস আপন কুলায়ে।
যা, যা, যা-না তেমনি করে।

লিখবনা কবিতা

লিখবনা কবিতা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

লিখবনা কবিতা আজ ভাবি নিজ মনে,
বসে আছি নিরবে বারান্দায় বৃষ্টির দিনে।
পুকুরের জল ছাপায় গড়ে রাস্তা দিয়ে,
মাছ ধরে বাড়ি ফিরে জেলেনীর মেয়ে।
হাঁসগুলো খেলে বেড়াই উঠানের জলে,
বাধা পড়ে বসে আছি বৃষ্টির বেড়াজালে।
দুই শালিক ভিজে বসে ছাদের কার্নিশে,
চাতকেরা খেলে বেড়াই অদূর আকাসে।
মোড়লবাড়ির বকাঝকা ডাকে চিৎকারে,
বৃষ্টিয় ভিজে গরুবাছুর আছিস কে ওরে।
বৃষ্টি ভিজা দিনটাই লিখে যেতাম কবিতা,
কবিতার খাতায় রাখতাম বৃষ্টির ছবিটা।
পাঠকেরা পড়েনা কেউ কবিতা আমার,
লিখবনা কবিতা তাই দিন যায় বেকার।


Saturday, 19 September 2015

প্রেমের বাজার

প্রেমের বাজার

আব্দুল মান্নান মল্লিক

চোখাচোখি পথে দুজন তরূণ তরূণী,
কথা দিলো হব দুজন জীবন সঙ্গিনী।
সহসা ভালোবাসা যেমনি ফোস্কা গেরো,
আজ আছে কাল নাই ভেঙে হবে টুকরো।
একদিনের ভালোবাসা যদি সত্য হয়,
তবে কেন গুরুজন বিচ্ছিন্নে দূরে রয়?
বহুদিন ধরে যারা রেখেছিলো বুকে,
গুরুজনের সম্পর্ক যায় একটি পলকে।
চিরদিনের ভালোবাসা যদি মিথ্যা হয়,
সহসা ভালোবাসা কেমনে সত্য হয়?
এলোমেলো বাতাস যেমন তরূণ তরূণী,
হতে পারে কখনো কি বিশ্বাসের সরণী?
ভজিবারে গুরুজন সময় নাই হাতে,
প্রেমিকার কথা ভাবে দিবসে ও রাতে।
ভালোবাসা ভালোবাসা শুনি বারবার,
প্রেমিকের প্রেমিকা ছাড়া আছে কে আর?
প্রেমিকার প্রেমে পড়ে এমনও ছেলে,
গুরুজনের ভালোবাসা দিয়ে রসাতলে।
আত্মীয় পরিজনদের ঠেলে দিয়ে দূরে,
প্রেমিকার সাথে প্রেমিক অজ্ঞাতে ঘুরে।
ভালোবাসার জন শুধু প্রেমিক প্রেমিকা,
তরূণ তরূণী ভাবে আরও ভাবে বোকা।
ভালোবাসা ভালো কথা আছে সবার জানা,
তাইবলে গুরুজনকে ভালোবাসতে মানা?
ভালোবাসার এক কথা বলে সবাই জানে,
পরিজন সম্পর্ক হারায় প্রেমের সন্ধানে।
সস্তা প্রেমের বাজার বসে শহরে ফুটপাতে,
কেনা-বেচা হয় প্রেম গাঁয়ের আড়ে-ওতে।
হারিয়ে যায় গুরু-ভক্তি প্রেমের দাপটে,
সস্তা প্রেমের লীলা-খেলা রাস্তায় ও ঘাটে।





Thursday, 17 September 2015

কে বলবে ঠিকানা

কে বলবে ঠিকানা

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ঝুমুর ঝুমুর নূপুর বাজে রাত দুপুরের পরে,
জানালা খুলে তাকিয়ে দেখি পদ্মা পুকুর ধারে।
মেঘে ঢাকা চাঁদের আলো দেখছি কারা এরা,
ছমক ছমক নাচের আসর চার রমণী ওরা।
ঘরের বাইরে বেরিয়ে পড়ি গেলাম চুপিসারে,
নাচন দেখতে বসে থাকি কদম গাছের আড়ে।
ভিন্ন রূপের রমণী বুঝি দেখছি প্রথম আজ,
রূপের ঝলক পড়ছে গড়ে নতুন নতুন সাজ।
পিঠের উওর ডানা সবার দেখতে চমৎকার,
ওদের সাথে হৃদয় মিশে ফিরেনা কাছে আর।
ডানার ঝাপটায় মারছে ছিটা গায়ে মাখে জল,
আস্থা হারাই নিজে তখন হয়েছি বুঝি পাগল।
হার মেনেছে বিশ্ব সুন্দরী বিশ্বে যতো আছে,
অজ্ঞাত এই চিরকুমারী চার রমণীর কাছে।
নাচের শেষে নামতে দেখি পদ্ম পুকুর ঘাটে,
স্নান করতে খেলছে ওরা দিয়ে জলের ছিঁটে।
হাসের মতো ভাসছে ওরা জলকে বুকে ছুঁয়ে,
ফিসফিসিয়ে বলছে কেমন মিস্টি হাসি দিয়ে।
ভাসছে জলে খেলছে খেলা পদ্মফুলের সাথে,
রূপের ঝলক পদ্মজলে কাক জ্যোৎস্না রাতে।
একে একে গেলো উড়ে আকাশ আলো করে,
কে বলবে ঠিকানা ওদের ভাবি গাছের আড়ে।

Tuesday, 15 September 2015

ঘুম ভাঙা রাত

ঘুম ভাঙা রাত

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ভাবি শুধু তোমার কথা সারা রাতি জাগি,
তোমার মুখের ছবিখানি সহস্র তারায় আঁকি।
কখনো বা খাতার পাতাই নাম লিখি বারবার,
এই জগতে তুমি ছাড়া কেইবা আছে আমার।
উঠে বসি ঘুমের ঘোরে নিরব রাতে শুনি,
বাজছে যেন পায়ের নূপুর রিনিঝিনি ধ্বনি।
চলার পথে দেখি তোমায় শাড়ির আঁচল দুলে,
দেখতে আরও সুন্দর লাগে এলোমেলো চুলে।
বিদ্রূপ করে হাসছে চাঁদ আমার দিকে চেয়ে,
বলে যেন চাঁদের আলোয় কেমন আছ ওহে!
চাঁদের বিদ্রূপ হারিয়ে যাবে সকাল যখন হবে,
হাসবে নাকি সকাল হলে পাড়ার লোকে সবে?
আশঙ্কা করে লিখলাম চিঠি হয়না যেন বৃথা,
পড়বে যখন চিঠিখানি ভেবো আমার কথা!
তোমার কথা ভাবি যখন গড়ে পড়ে জল,
অনেক কষ্টে লিখি চিঠি আঁখিতে ছলছল।
ভালোবাসার চিঠিখানি আজকে দিলাম নতুন,
উত্তর দিয়ে নিভিয়ে দিও চিত্ত বনের আগুন।




Friday, 11 September 2015

বর্ণচোরা

বর্ণচোরা (প্রাপ্তি প্রকাশিত)

আব্দুল মান্নান মল্লিক

মানুষ যত জনে জনে,
কে কাহারে রাখে চিনে।
লোহিত রঙে মৃত্যু জোহর,
থাবাই তাদের পশুর নখর।
ঘুরছে দিনে মুখোশ পরে,
ধোঁয়া তুলসি আকার ধরে।
নকশা গতর মানুষ আদল,
চিনতে নারি আসল নকল।
রাত আঁধারে নর খাদক,
দিনে তারা সমাজ জনক।
চিনছে যারা বাঁচাতে প্রাণ,
ডাকছে সবাই বাবু সেলাম।
দিন ফুরালে আঁধার রাতে,
ঘুরে বেড়াই ছুরি হাতে।
করছে ডাকাত মার দাঙ্গা,
দিনের ইঁদুর রাতে চাঙ্গা।
পথে নামলে মুখোশ পরা,
আপথে যায় মানুষ যারা।
গাঁজার পরে মদের আসর,
আকড়া বসায় সাঁঝের পর।
যেমন খুশি করছে লঙ্ঘণ,
তাইতো সমাজ অধঃপতন।
মরছে সমাজ তাদের হাতে,
ক্ষতি কি আর আমার তাতে?
চিনতে তাদের মুখোশ খুলি,
মরবো নাকি খেয়ে গুলি?
আক্ষেপ রাখি বুকে বেঁধে,
হয়না সাহস একার সাধ্যে।