Thursday, 31 December 2015

নতুন বছর

নতুন বছর

আব্দুল মান্নান মল্লিক

এক দুই করে কত গুনেছি প্রহর,
এইতো এসেছে আবার নতুন বছর।
বোমের শব্দ আর ধোঁয়া আঁধার,
অপেক্ষায় ধরাধাম খুলে দিল দ্বার।
বরণের থালা হাতে চাঁদ মামা ঐ,
সারিতে তারকাদের আনন্দের হৈচৈ।
বরণ করেছি সবে খুলে মন প্রাণ,
ভেদাভেদ ভুলে আজ সবাই সমান।
দূর কর গ্লানি যত মনের আঁধার,
দূর কর কুসংস্কার হবে নব-সংস্কার।
ব্রতে বাঁধিব হাত গড়িব সমাজ,
একসাথে চলিতে বাধা নাই আজ।
চঞ্চল মন আজ উল্লাসিত ধরণী,
শুরু হল নবরূপে ধরণীর জীবনী।

Thursday, 24 December 2015

গুরুবলে বলিষ্ঠ


গুরুবলে বলিষ্ঠ

আব্দুল মান্নান মল্লিক

এক পৃথিবী মানুষের ভিড়ে
তোমারে পেয়েছি খুজে গুরুর আসনে।
কথা দাও, শুধু বল একবার।
দিয়েছি ঠাঁই চরণে আমার।
তব ত্যাজিব সম্বল যত, পারের আশায়,
সাথে নাও মোরে, ইচ্ছা যেথায়।
একা ফেলে যেওনা অজানা কোনো দূরে,
অমূল্য বস্তু, তোমারে পেয়েছি জগত ঘুরে।
সাগরতল বা স্থলে নভমরুত্ যেথা তুমি,
সাথে থেকে নরকেও যেতে রাজি আমি।
নোংরা ভরে গেছে সারা গায়,
ছুঁয়ে দাও, কর পাপাচার উদ্ধার,
হবো মানব পূর্ণতায় বিকাশ।
যেমন খুশি বলুক লোকে,
স্বার্থান্বেষী বলে বলুক অলক্ষ্যে।
আসে কি যায় আমার তাতে?
বাহুবলে বলিষ্ঠ গুরুর সাথে।

Wednesday, 23 December 2015

আসতে যেতে

আসতে যেতে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

দেহান্তর অহরহ হে মহাজ্যোতি,
ঘুচিয়ে দাও তমিস্রা, আলোকিত হক ধরণী।
ওই দূর নভপ্রান্তে পূণর্জনমে,
রাঙিয়ে দিয়েছ সোনালি রঙে,
অন্বিত যেথা, নভপ্রান্ত বৃক্ষ সাথে।
হে রবি, আমর্শে তোমার,
পূনর্জন্ম দিবসের ও।
এমনতো ছিলেনা জন্মে সেদিন।
তবে কেন আজ, মেঘেদের সাথে লুকোচুরি?
শিশিরে সিক্ত, মোর সারা দেহ,
আকাঙখিত অর্জনি তোমার তাপদীপ্তি।
হয়ে যাবে তবে, শোভিত ভুবন।
জৌলুষে তোমার, শোভিত হবে পুষ্পদল।
পুষ্প সৌরভে, মধুগন্ধে হক উল্লাসিত,
প্রজাপতি আর মৌমাছিদের দল।
অবসান কর হে এবার, খেলা লুকোচুরি।
আর নয়, নিরসন কর পর্দা মেঘ।
যাবার কালে, বকপাখে রোশনাই লুকায়ে।
সিঁদুরে আবির ছড়িয়ে মেঘের গায়ে,
ঢলে পড় মৃত্যুর কোলে আপন কুলায়ে।




Sunday, 20 December 2015

মুঠো ধুলির সাক্ষী

মুঠো ধুলির সাক্ষী

আব্দুল মান্নান মল্লিক

হাসি কান্নায় ছিল যারা জীবন্ত রূপে,
দূরে সরে যায়নি তারা আছে সমীপে।
পদদলিত করেছ পিষে নির্মম হয়ে,
অবজ্ঞায় পদতলে তবুও থাকে চেয়ে।
এক মুঠো ধুলি ধরে কর যদি প্রমাণ,
ধুলিতে মিশিয়ে লাখো অচৈন্য প্রাণ।
কান পেতে শুনো যদি শোকসঙ্গীত,
ধুলিতে মিশিয়া আপন বংশ অতীত।
ছিল সবার সাথে তারা বাপঠাকুরদা,
তবু কেন ঘৃণা তাদের কর অমর্যাদা।
গায়ে যদি উড়ে পড়ে ধূলিকণা ছোটো,
ছুড়ে ফেলে বল তারে পাদুকার এঁটো।
নিষ্ঠুর হয়ে তাদের করেছ অপমান,
দাহ করে বানিয়েছ অট্টালিকা দালান।
চিৎকার করেছে কত করে আর্তনাদ,
সহে আছে নির্মমতা করেনি প্রতীবাদ।



Thursday, 17 December 2015

সিঁধেল চোর

সিঁধেল চোর

আব্দুল মান্নান মল্লিক

আকাশের চন্দ্রমা আজও জেগে আছে,
প্রিয়তমা ছিল সেদিন আজ নাই কাছে।
বিকেল পেরিয়ে সেদিন সান্ধ্য জোছনায়,
কত কথা হয়েছিল চোখাচোখি দুজনায়।
জমানো অনেক কথা করেছিলে জ্ঞাপন,
বলেছিলে ভালোবেসে তুমি আপন জন।
বসে ছিলাম দুইজনে দূর্বাঘাসের উপর,
রসিকতা করেছিলে বলে সিঁধেল চোর।
তাইতো করেছি হরণ তোমার মর্মদেশ,
চোর রূপে কাছে তোমার হয়ে ছদ্মবেশ।
সিঁধকাটা চোর আমি ভাঙি হৃদয় প্রাচির,
শরিকানা করেছি তোমার হৃদয় মন্দির।
তোমাদের জাতি নারি দেখিতে কঠোর,
সহজে নুয়ে পড়ে দেখলে সিঁধেল চোর।

Friday, 4 December 2015

ত্রিজ্যোতি ও আঁধার কালো

ত্রিজ্যোতি ও আঁধার কালো

আব্দুল মান্নান মল্লিক

প্রহরী হতো যদি কালো অন্ধকার,
ঘুচিত দম্ভ তোমার জ্যোতির অহঙ্কার।
সহস্র লোচনে রাতে করে চলাফেরা,
নিরর্থক হয়ে যেত নীলাঙ্গনের তারা।
ভেবে যদি থাক তুমি ঘৃণিত কালো,
অমর্যাদা হতো তোমার জ্যোতির ঔজ্জল্য
কালোতে কর ঘৃণা জ্যোতির অহঙ্কারে,
টক্কর দিয়ে সাথে তবু গেছো হেরে।
হে কালো শশী কিসের ঔদ্ধত্য,
তুমিও অন্ধ, অরূণে প্রদীপ্ত।
হইবোনা বলিতে দ্বিধা,
মিথ্যা কর কেন দম্ভ বৃথা।
ভেবেছ কখন কি? অতীত জনম কথা?
কোথা হতে ধারণি উদ্দীপ্ততা?
অন্ধয়ে ছিলাম সেদিন সবে,
ভেবেছি জ্যোতির উৎস তুমিই ভবে।
দেখেছিলে চেহারাটা কালো আকার,
হার মেনেছে অরূণ কতশত বার।
তুমিতো তুচ্ছ কাছেতে তার,
মাথা তুলে আছে সর্বত্র কালো আঁধার।
বাধাহীন ইচ্ছায় খুশীতে যেথায়,
বিচরণ করে সদা কালো নির্দ্বিধায়।
কালো যখন সরে যায় খুলে দিয়ে দ্বার,
তবেই তো পাও তুমি পৃথিবীর অধিকার।




Thursday, 3 December 2015

হিমেল হেমন্ত

হিমেল হেমন্ত

আব্দুল মান্নান মল্লিক

রঙে রঙে সুরে সুরে আসিল হেমন্ত,
মিশিয়ে দিবো হেমন্তে কবিতার ছন্দ।
গাঁদা ফুলের গন্ধে ভরা হিমেল বাতাস,
ধোঁয়াটে আকাশটা শিশিরে সিক্ত ঘাস।
শত বাধা তুচ্ছিয়ে কুহেলিকা এড়িয়ে,
রবিকর আসে তবু আকাশটা পেরিয়ে।
দল ছাড়া মৌমাছি ফুলের আলিঙ্গনে,
মধু পান করে যায় গুনগুনানি গানে।
শালিকের ঝাঁক উড়ে মাথার উপর,
সুরতরঙ্গ হারিয়ে করে কেঁচরমেচর।
যেদিকে তাকায় দেখি মাঠ প্রান্তরে,
বৃক্ষরাজি দাঁড়িয়ে আছে সারে সারে।
খাল বিল ডোবাতে শাপলা আর পদ্ম,
বাতাসে উড়ে আশে গাঁদা ফুলের গন্ধ।
গলাকাটা খাজুর গাছ দাঁড়িয়ে মাঠে,
টসটস পড়ে রস বাঁকা গাছের কাঠে।
ছোট পাখির কল্লোল খাজুরের রসে,
কেউ উড়ে খায় রস কেউ আছে বসে।
এক বাটি মুড়ি হাতে চাঁদু বারান্দায়,
খাজুরের ফুটন্ত রস মুড়িতে মিশায়।
স্বর্ণপুরী বাংলা দেশ পাকাধানের ঘ্রাণ,
পীতবর্ণ পুষ্পরোদে বাংলা মায়ের প্রাণ।
গৃহবধূর ঘরে ঘরে নবান্নের উৎসব,
ঢেঁকিতে ধান ভাঙা বাঙালির গৌরব।
সেদিনের হেমন্ত বদলে গেছে কতো,
তবুও আছে যতো কোথা নাই এতো।