Thursday, 30 April 2015

খুকুর ইচ্ছে

খুকুর ইচ্ছে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

বলাকা হাটিছে দেখ নীল আঙিনায়।
ইচ্ছে হয় বারবার নিজেকে হারায়।।
সাধের আসন গড়ি অন্তরে আমার।
আবার আসিব ফিরে করি অঙ্গীকার।।
সাত রঙের প্রজাপতি দেখিবে যেমনে।
রেণুপুঞ্জ সারা দেহ পুষ্পের আলিঙ্গনে।।
মেঘ হয়ে উড়ে যাব ভাসিব আকাশে।
কখনো বা পাখি হব উড়িব বাতাসে।।
হইতো বা তারা হয়ে হাসিব মিটিমিটি।
স্পর্শের বাইরে রব যাবে তোমার দৃষ্টি।।
অভিনয় করিব আমি মিথ্যা অভিমানে।
উজ্জ্বল চন্দ্রিমা হয়ে জ্বলিব আসমানে।।
বারবার ইসারা করে আমারে ডাকিবে।
দুধের বোতল ধরে দুই হাত বাড়াবে।।
ডাকিয়া বলিবে যখন আয় খুকু আয়।
রংধনুর সিড়ি বেয়ে আসিব ধীর পায়।।

Saturday, 18 April 2015

করুণাময়

করুণাময়

আব্দুল মান্নান মল্লিক

কত লোকের সমাগম জগত মাঝারে,
কেউবা অপেক্ষায় রয় নির্জন গভীরে।
ঘুমিয়ে জাগিয়া যখন করিয়া নড়চড়,
সেথায় পৌঁছায় আহার নলের ভিতর।
শীতল গরমে সমন্বয়ে রাখিয়াছ তারে,
অসীম দয়ার ভান্ডার হারায়না সাগরে।
জগতের মাঝে আসবে নতুন অতিথি,
অগ্রে পৌঁছে আহার বিধাতার প্রস্তুতি।
বুঝিতে পারে কয়জন তোমারি লীলা,
মাতৃদুগ্ধ রয়েছে পূর্ণ আসিবারে বেলা।
অসীম করুণা মাঝে তোমার অবদান,
স্বীয়হস্তে গড়া তোমার সারাটা জাহান।
চাহিলে পারিবে তুমি করিতে সমান,
ফুঁয়েতে উড়িয়া যাবে জগৎ আশমান।

Thursday, 16 April 2015

দৈবের সম্মুখে

দৈবের সম্মুখে

আব্দুল মান্নান মল্লিল

মনের আঙিনা পরে, বয়ে যায় ঝড়।
তবুও ভাঙেনি ঘুম, ঘুমিয়ে অঘোর।।
মেঘের গর্জনে ডাক, বাহিরে কাহার।
জাগিয়া খুলিয়া দিই, নিরূদ্ধের দ্বার।।
খুলিয়াছে অন্তর চক্ষু, চাহিতেই দেখি।
দাঁড়ায়ে সাদা বেশে, দেখিতেছি একি?
হাতকড়া ধরে হাতে, দাঁড়িয়েছে দ্বারে।
চকিত ঘুমের ঘোরে, দেখিতেছি যারে।।
চমকিছে বিদ্যুৎ যেন, বিশাল আকার।
কর্তার হুকুম তামিল, নির্মম কারবার।।
বলিয়া উঠিল মোরে, বসতি ওপারে।
আত্মার বাহক আমি, তোমার দ্বারে।।
মমতার নিদর্শন তবু, অন্তরে তাহার।
রুখিতে নাই কেহ, মোর পাহারাদার।।
কায়াখানি সমর্পিনু, স্বজনের নিকট।
জেরার সম্মুখে আমি, হইয়া অকপট।।
কর্ণেতে বাজিয়া ওঠে, শাস্ত্রের ধ্বনি।
স্বজনেরা পড়ে গ্রন্থ, মনোযোগে শুনি।।
আদেশ করিয়া মোরে, যতটুকু সম্বল।
সাজাইয়া নিও তোমার, কর্মের ফল।।
হাতকড়া দিয়া মোরে, করে তাড়াতাড়ি
রশ্মির অধিক বেগে, আকাশপথে পাড়ি।।

Tuesday, 14 April 2015

নববর্ষের আগমন

নববর্ষের আগমন

আব্দুল মান্নান মল্লিক

বৈশাখীর গন্ধে ভরা মাতাল বাতাস,
উদাসী মনের মাঝে নতুন প্রতিভাস।
বুকভরা আশাতে আজ হরিৎ ডালায়,
পথ চেয়ে দাঁড়িয়ে তোমার অপেক্ষায়।
নববর্ষের হস্তান্তরে এক নতুন জীবন,
তাইতো রয়েছি সবে দিতে সম্ভাষণ।
জলদের যাওয়া আসা নভর কোলে,
ক্ষণিক আলোকচ্ছটা পড়িছে ভুতলে।
ঐ দেখা যায় নববর্ষ শীতল হাওয়ায়,
হেলিয়া দুলিয়া ভাসে সবুজ পাতায়।
বৃষ্টিহীনে শান্ত হাওয়া উল্লাসিত মনে,
নববর্ষের আগমন মোদের আমন্ত্রণে।
সজ্জিত নবরূপে গাছের সবুজ পাতা,
নববর্ষের হিসাব গুনতে নতুন খাতা।
নববর্ষের সঙ্গী হয়ে বাতাসের আগম,
কচিপত্র কম্পনে নাচে ভাঙিয়া শরম।
হারিয়েছি যদিও আজ একটি বছর,
নতুন স্বাদুতার সৌরভ ধরণীর উপর।
বিলীনের তৃণ বীজ মাটির অভ্যন্তর,
নববর্ষের আলিঙ্গনে নব জীবণ পুনর।
কুষিফলে বৃক্ষশাখা ঝুলে মাথার পর,
সাজানো ময়দানে আসি নতুন বছর।
বৃষ্টিয় ভিজা মাটি গত বছরের সন্ধ্যে,
উল্লাসীত নববর্ষ ভিজা মাটির গন্ধে।

অন্তরঙ্গ

অন্তরঙ্গ

আব্দুল মান্নান মল্লিক

তোমাদের সুখী করতে দেহ প্রাণ মন
বিলিয়ে দিলাম নইলে বৃথাই জীবন
তোমাদের ভালবাসা অন্তরের মাঝে
জ্বলিবে প্রদীপ হয়ে দিবসে ও সাঁঝে
কবিতা নহে মোর আবদ্ধের প্রতিজ্ঞা
যেখানে রাখিবে রব করোনা অবজ্ঞা

Saturday, 11 April 2015

হয়তো

হয়তো

আব্দুল মান্নান মল্লিক

আকাশে উড়িয়া আমি, ঘুড়ির মতো।
গুটাবে হাতছানিতে, লাটায়ের সুতো।।
অলক্ষ্যের ছায়াপথ এক, নতুন ভূবন।
গড়িয়া উঠিছে সেথা, আত্মার মিলন।।
আমার সমীপে গেছে, অনেকেই যারা।
সেথায় মিশিয়া হব, ছায়াপথের তারা।।
ছায়াপথের তারা হয়ে, জ্বলিয়া নিভিব।
আকাশের কোল হতে, তোমারে দেখিব।।
কাঁদিয়া করিবেনা তুমি, সারণী পিছল।
সমরাস্তায় হাঁটিবে সবে, হইওনা বিহ্বল।।
কখনো আসিব কাছে, রামধনু রূপে।
মিশিয়া রহিব তখন, জলকণার স্তুপে।।
সাত রঙের রামধনু, পাইবেনা খুজে।
অগোচরে রব দৃশ্যের, মিশিয়া সবুজে।।
জলধি কখনো জলদ, আবার জলধি।
হইবেনা আত্মার মরণ, রহিব নিরবধি।।

Friday, 10 April 2015

জরাজীর্ণ বৃক্ষ

জরাজীর্ণ বৃক্ষ (b.k)

আব্দুল মান্নান মল্লিক

অশ্বত্থ বৃক্ষের তলে, চাহেনা কেহই ফিরে,
অবজ্ঞায় দাড়িয়ে আছে, সবার অনাদরে।
এখনও আছে কতক, গাঁয়ের প্রবীন যত,
বলিতে পারেনা কেহ, বৃক্ষের বয়স কত।
জরাজীর্ণ রোগাগ্রস্ত, নির্জনে মাঝ মাঠে,
আংশিক তাজা বৃক্ষ, বাকিটা শুস্ক কাঠে।
কাঠঠোকরার ঠোকাঠুকি, জীর্ণ কাষ্ঠগায়,
বৃক্ষছালের পোকাগুলো, ধরে ধরে খায়।
চঁচুর আঘাত দিয়ে, করিছে বৃক্ষে কোটর,
বিহগেরা বাসা বাঁধে, শুস্ক কাঠের ভিতর।
শুকনো ডাল ঝরে পড়ে, পচনশীলে গুঁড়ি,
জালানী কুড়াতে থাকে, গাঁয়ের এক বুড়ি।
বিদীর্ণ বৃক্ষ গোঁড়া, প্রবেশি আলোকচ্ছটা,
শীর্ষেতে জীর্ণ শাখা, খসে পড়ে পত্রবোঁটা।
ছিলো হইতো কোনদিন, দিয়ে সবারে যশ,
নীরবে সহিয়া কস্ট, সেতো ছিলো নির্দোষ।

Wednesday, 8 April 2015

দুর্গম পথে

দুর্গম পথে

আব্দুল মান্নান মল্লিক

হাঁটিয়া অনেক পথ করিয়া বাধা অতিক্রম।
মাঝ পথে পড়ে আছি সম্মুখে আরও দুর্গম।।
বিরামহীনে পথ চলি গতিশীল এই জীবন।
একাকী দিয়া পাড়ি কখনো হইয়া আনমন।।
সম্মুখে ভরিয়া জঞ্জাল কেমনে হইবো পার।
বিলম্বে মাঝপথে হইতো নামিবে অন্ধকার।।
অন্তর জ্বলিছে কখনো অনুতপ্তের আগুন।
ধিকি ধিকি অগ্নিতাপ দুর্বল করিছে দ্বিগুণ।।
শুরুতে চলিতে পথ করেছি হইতো ভুল।
বিধাতার মাপকাঠিয় দিয়ে চলেছি মাসুল।।
অনুগামী তুমিই আছ করিতে মোরে পার।
জ্বালিয়ে দিয়ে বাতি ঘুচিয়ে দিও আঁধার।।
ভুল যদি করেছি কতক কাছেতে তোমার।
ক্ষমা চাহি বার বার অবারিতে করিও পার।।

Tuesday, 7 April 2015

সবুজে আকাশ

সবুজে আকাশ

আব্দুল মান্নান মল্লিক

সবুজ আঙিনা পরে দূরের কোনো গাঁয়ে। 
বড় বড় গাছের মাথা নীল গগনের গায়ে।।  
আশির্বাদ করে গগন ছুঁয়ে গাছের মাথায়। 
তোমাদের হবে মঙ্গল থাকবে সুখী সবাই।। 
গ্রীবা উঁচিয়ে বক এখানে কেউ ওখানে। 
সমীপে করিছে গমন আহারের সন্ধানে।।  
সাদা সাদা বকগুলো আকাশ পথে বেয়ে। 
ধনুকের বাণের আকার উড়ে সারি দিয়ে।। 
সবুজ আঙিনার রাস্তায় গুটি গুটি পায়ে। 
বুড়ির পশ্চাতে বালক পুঁটলী মাথে নিয়ে।। 
ছোট ফুল রয়েছে ফুটে ঘাসের আগালে। 
প্রজাপতি উড়ে সেথায় বক্র পথে খেলে।। 
খোলা আকাশ তলে চরিছে ক্ষেতে ভেড়া। 
কোথাও গাছের তলে বসে রয় রাখালেরা।। 
সবুজ দেশের প্রান্তে মিশিয়া নীল আকাশ। 
জ্ঞাতিত্বের সম্পর্ক গড়ার পাইছে অবকাশ।।

Monday, 6 April 2015

পদ্মদিঘী

পদ্মদিঘী

আব্দুল মান্নান মল্লিক

বুনোহাঁস খেলে জলে ডানার ঝাপটায়
জলের বিন্দু ছিটিয়ে দিয়ে পদ্ম পাতায়
পশ্চাতে সাঁতার দিয়ে সারিতে শাবক
কখনো ঢাকিছে মাতা ছড়িয়ে পালক
আকাশের চিল উড়ে করিয়া খেয়াল
শাবক লুকাতে করে পাতার আড়াল
ঠোঁটের আঘাত দিয়ে ফলের উপর
দানাগুলো বাহির করে অতি সত্বর
ডুবিছে জলে কখনো উঠিয়া আবার
শাবকেরা পদ্মের দানা করিছে আহার
জড়ায়ে যায় কখনো লতায় পাতায়
বিরামের মাঝে কখন ছুটিয়া পালায়
ঘাঁটাঘাটিয় লতাপাতা হয়ে জেরবার
প্রভাত পশ্চাতে হয় হাঁসের অত্যাচার

Saturday, 4 April 2015

ঘরের বউ ঘরনী

ঘরের বউ ঘরনী

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ঘরের বউ ঘরনী করব কেন চাকুরী।
বাবা দিল তোমায় করছ তুমি বিক্রি।।
মান সম্মান কিছু থাকে যদি তোমার।
কামাই করবে তুমি হবনা ঘরের বার।
সারা দিনটার পরে খালি হাতে ফিরে।
তোমার মতো স্বামী হতে সবাই পারে।।
আমি ঘরের বউ তাইতো শুধু জানি।
করবো কেন আমি পরের চাকরানি।।
স্বামীর ঘরে রব মাথার ঘোমটা টানি।
নইলে পাড়ার লোক করে কানাকানি।।
হবে যখন কমতি উপায় আরো আছে।
বাড়ির আসপাশে ভরিয়ে দিবো গাছে।।
হাতের কাজ জানি ভাবনা কেন আর।
বুনাবো ঘরে আমি নিয়ে যাবে বাজার।।
করলে বিয়ে তুমি পরের হুকুম শুনি।
যেমন হবে নিজের চাইনা হতে ধনী।।

ভ্রান্তি

 ভ্রান্তি

আব্দুল মান্নান মল্লিক

শীতল বাতাস গায়ে নিদ্রায় বিভোর।
অচেনার গতিপথে তাড়াহীন মন্থর।।
ভোরের আভাস পেয়ে ডাকিয়া পাখি।
ভাঙিলো নিদ্রা মোর উঠিলাম জাগি।।
স্বপ্নতে ঘিরিয়া ছিলো এমনই মজার।
ফুল পরীর দেশে ছিলো রাজার কুমার।।
বন্দির মায়াজালে ঘেরা সারা দেশটা।
ছেদনে ব্যার্থ কুমার করে অনেক চেষ্টা।।
ফুলের বাগানে ছিলো সোনার কুটির।
রাজকুমার বন্দি সেথা কাঁদিয়া অস্থির।।
লাল নীল হারা ছিলো পুষ্পে শোভন।
ফিরিতে চাইনা মোর পলকহীন নয়ন।।
রংবেরঙের প্রজাপতি ফুলের উপর।
ফুলেতে মাখিয়া রঙ অতি মনোহর।।
নামহীনে ফুলগুলি চাহে মোর পানে।
উৎপাতে নিদ্রাভঙ্গ পাখিদের গানে।।
কোথায় লুকায়ে যায় ফুল পরীর দেশ।
নয়ন খুলিতে দেখি আগের পরিবেশ।।