Thursday, 20 August 2020

আকাশের অস্তিত্ব কথা

 আকাশের অস্তিত্ব কথা


আব্দুল মান্নান মল্লিক 


উদ্বেগে খুজে তার শুরুতে জীবন, 

আশয় তার পাখা মেলে করে নিরীক্ষণ। 

কি আকার কি বর্ণ তার নাম শুধু সার,

কেন্দ্রবিন্দু কোথায় তার হয়নি উদ্ধার। 

দূর হতে বহুদূর দৃষ্টির সীমানায়, 

কেউ ভাবে রঞ্জিত আকাশটা নীলিমায়।

বয়ে যায় ঝড় যদি উঠে জলচ্ছাস,

ভূমিকম্পের শিহরণে অনড় আকাশ। 

অহরহ আকাশটায় দুর্যোগ গর্জন, 

নাই তার অনুভূতি নাই তার শিহরণ। 

মেঘেদের ওঠানামা আকাশটা মলিয়ে,

তবুও অটল দৃঢ় অবিনশ্বর অক্ষয়ে।

কোথায় অস্তিত্ব ঠাঁই, শূন্যটা কোথায়, 

কোথায় তার প্রান্তদেশ বস্তু অকায়।

অগণিত নাম ডাক অলীক কল্পনা, 

শূন্যতেও অদৃশ্য বহুবিধ জল্পনা।

গুণী জ্ঞানী জনে-জনে আসে যায় যত,

নিষ্পাদনে মতান্তর পাইনি তার অস্তিত্ব। 

ক্ষয়ে ক্ষয়ে একদিন বিনাশ হবে বিশ্বটা, 

রয়ে যাবে কৌতূহল অবশিষ্ট আকাশটা,

গননার রাশিফল অবশিষ্ট রহস্য,

যত মত তত পথ গুরু কি'বা শিষ্য। 


Sunday, 16 August 2020

বনিতা নির্যাতিতা

 বনিতা নির্যাতিতা 


আব্দুল মান্নান মল্লিক 


স্বামীর ঘরে নির্যাতিতা লক্ষী বনিতা,

স্বামীর প্রহারে লক্ষী নিকৃত লাঞ্ছিতা।

ননদের জ্বালাতন আর স্বামীর প্রহার, 

কুলবধূ লাঞ্ছিতা শাশুড়ীর অত্যাচার। 

ক্ষুধার জ্বালায় কাটে দিন সমুদায়,

ক্ষণে এক মুঠো নয়তো ব্যগ্র ক্ষুধায়। 

দিনে দিনে বাড়ে জ্বালা নিভৃতে সহে,

হাসিকান্না মানা তার সদা থাকে ভয়ে!

সংসারে ক্ষয়-ক্ষতি আসে যদি অল্প,

সব দোষ কুলবধূর গড়ে ওঠে জল্প।

অক্লিষ্ট কর্মযোগে শুনে অশ্লীল গালি, 

হাসি মুখে সহে তবু যেন এক পাগলি।

শাশুড়ির কানভাঙানি ননদের কান্না,

ছলনার বশে স্বামী অবাধ্য উত্তেজনা। 

রোষাগ্নির পদাঘাত চুলের মুঠি ধরে,

শত কষ্টে কৃতজ্ঞ বণিতা স্বামীর ঘরে।

ঠেলে দিয়ে বলে স্বামী ঠাঁই নাই ঘরে,

তবু ভুলে পিতৃগৃহ চেয়ে থাকে দূরে। 

অপেক্ষায় কাঁদে বনিতা পথের ধারে,

অশ্রুজলে রাত্রিযাপন বাড়ির বাহিরে।

অনাদরে ডাকে যদি স্বামী একবার, 

ভুলে যাবে লক্ষী সব দুঃখ অনাচার। 

কুলবধূ নির্যাতিতা যদি স্বামীর ঘরে,

দুর্বিষহের বিষবৃক্ষ অনটন সংসারে! 




Sunday, 2 August 2020

অনৈক্য

অনৈক্য

আব্দুল মান্নান মল্লিক

ব্রতে মগ্ন আকারে কেউ, কেউবা নিরাকারে, 
স্বার্থান্বেষী সম্পদ লুটতে বিভেদ সৃষ্টি করে।
দিকভ্রান্ত পথের পথিক হোঁচট খেয়ে মরে,
শীর্ষাসনে কৌশল বাঁধে দন্দ্ব বাঁধাই ঘরে।
চক্ষু থাকতে অন্ধ যারা কষ্টে খেটে মরে,
ধর্মযাজক ইচ্ছা যেমন হাতের পুতুল গড়ে।
শীর্ষাসনের মানুষ ওরা হুকুম করে যেমন, 
বেকুব মানুষ শান্তশিষ্ট ওদের ইচ্ছা মতন। 
ভূষণ প্রায় রাজার বেশে সিংহাসনের ঘরে,
স্বার্থ ব্রতে ব্যস্ত ওরা জীবন অকর্মন্য কুঁড়ে। 
অক্লেশে লাভের আশে হরেক রকম কৌশল, 
সংস্রব ওদের চোখের বালি সর্বনাশার দল।
ভেদাভেদের বাসা বাঁধে মহামিলনের মাঝে,
ফুসমন্তর কানে কানে কিবা সকাল সাঁঝে।
এ-উহারে চিনতে নারে এইতো জীবন সার,
কেমন করে চলব তবে মানব জনম বেকার।
গুরুভার আর দায়ভার দিলাম যখন হাতে,
চলতে মানা মিলেমিশে তোমার আমার সাথে।
বিধিনিষেধ বানাই ওরা শীর্ষে আসন পেতে,
ধর্ম বাঁচাই কেমন করে নামহীন মানবজাতে।
সরল পথের মানুষেরা চলতে সরল পথে,
শীর্ষাসনের মানুষ ওরা বাঁধে জাতপাতে।
গড়ব ভাবি সভ্য সমাজ ভালোবাসায় মুড়ে,
জাতবিচারে দ্বন্দ্ব বাঁধে রুখবো কেমন করে?

নিদর্শন

নিদর্শন

আব্দুল মান্নান মল্লিক

কখনো-সখনো অদূর উদ্যানে
দৃশ্য গোচর।
খসে পড়া ইঁট নির্জনে,
সাক্ষ্য ঐ ভাঙা ঘর।
নাচেনা আর বাইজি সেথা,
বসেনা সুরা-পানের আসর।
খণ্ডিত পিয়ালা সুরা-পান করা,
হয়তো বা আজও মাটির ভিতর।
আরও সেথা শুকিয়ে যাওয়া,
রক্ত দিঘির পারে ভগ্ন খঞ্জর।
কষ্টে ঠাহরি, হয়তো গজ-অস্থি,
কখনো ভাসে মাটির উপর।
রাত দুপুরের পর?
ওড়না উড়ানো বাইজীর পদধ্বনি ,
ঘরের চত্বর। 
কাঁকন বাজে রিনিঝিনি, 
যদি হয় চাঁদ হারানো ভোর।
আছে কিনা কেউ কি জানে,
তাদের বংশধর।
হয়তো বা জীবিত
নিভৃতে গুনিছে প্রহর।
শুকানো রক্তাক্ত গায়ে,
আজও কাঁদে ঐ পলাশীর প্রান্তর।
কোথায় গজ, অশ্ব।
কোথায় সৈনিক লোক-লস্কর।
কেউ জানে কি তাদের খবর?